
মুম্বই, ২৪ নভেম্বর (হি.স.): প্রয়াত হয়েছেন বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। সোমবার মুম্বইয়ে নিজের বাসভবনে শেষ নিঃশ্ব্যাস ত্যাগ করেন তিনি। যদিও তাঁর পরিবারের তরফে এই বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি। কিংবদন্তী অভিনেতার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ।
পরিচালক করণ জোহারও ইনস্টাগ্রামে ধর্মেন্দ্রকে নিয়ে একটি আবেগঘন পোস্ট করেছেন। মৃত্যুকালে ধর্মেন্দ্র’র বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। চলতি মাসের শুরুতে তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। চলতি মাসের শুরুতে তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ধর্মেন্দ্র। যদিও সেখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফেরেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা। তারপর থেকে প্রকাশ্যে তাঁর আর কোনও ছবি সামনে আসেনি। এদিন ধর্মেন্দ্রর পরিবারের সদস্যদের মুম্বইয়ের ভিলে পার্লে শ্মশানে যেতে দেখা যায়। শ্মশানে হাজির হন অমিতাভ ও অভিষেক বচ্চন, সলমন খান সহ একাধিক অভিনেতা ও কলাকুশলিরা। ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণের খবর পেয়েই মুম্বইয়ে অভিনেতার বাসভবনের বাইরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন ভক্তরা।
পঞ্জাবের লুধিয়ানার কৃষক পরিবারের সন্তান। যৌবনকাল থেকেই তাঁর টল ডার্ক হ্য়ান্ডসাম চেহারার জন্য পাড়া প্রতিবেশিরা ‘হিরো’ বলেই ডাকতেন। হয়তো সেই ডাক থেকেই মনের মধ্যে স্বপ্নের বুনোট। আর সেই স্বপ্নকে সঙ্গে নিয়েই মুম্বইয়ে চলে আসেন ধর্মেন্দ্র সিং দেওল।
প্রথম ছবি ১৯৬১ সালের ‘দিল ভি তেরা’, ‘হাম ভি তেরে’। প্রথম ছবি থেকেই ধর্মেন্দ্র বুঝিয়ে দিয়েছিলেন তিনি লম্বা রেসের ঘোড়া। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ধর্মেন্দ্রকে। ‘সুরত অউর সিরাত’, ‘বন্দিনী’, ‘দিলনে ফির ইয়াদ কিয়া’, ‘অনপড়’, ‘পুজা কে ফুল’, ‘আঁখে’, ‘ফুল অউর পত্থর’, ‘আয়া মিলন কি বেলা’, ‘আয়া সাওয়ান ঝুমকে’, ‘মেরে হামদম মেরে দোস্ত’, একের পর এক সুপারহিট ছবি। কখনও পুরোদস্তুর প্রেমিক হিরো, তো কখনও অ্য়াকশনপ্যাকড নায়ক। সবেতেই বক্স অফিসকে হাতের মুঠোয় নিয়েছিলেন। যার প্রমাণ হেমা মালিনীর সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘সীতা অউর গীতা’ এবং অমিতাভের সঙ্গে ‘শোলে’। শোলের জয়-ভীরু তো বলিউডের আইকন। বন্ধুত্ব মানেই ‘ইয়ে দোস্তি হাম নেহি তোরেঙ্গে…’
তবে শুধু সিনেমার পর্দা নয়, ধর্মেন্দ্র বাস্তব জীবনও ছিল রঙিন। ১৯৫৪ সালে ধর্মেন্দ্রর বাবা-মা ধর্মেন্দ্রর সঙ্গে প্রকাশ কর নামক উনিশ বছর বয়সী এক তরুণীর বিয়ে দেন, তখন ধর্মেন্দ্রর বয়সও ছিল উনিশ, এই প্রকাশ কর এবং ধর্মেন্দ্রর চারজন সন্তান হয়, দুই ছেলে সানি দেওল এবং ববি দেওল মেয়ে বিজেতা এবং অজিতা। দুই ছেলে বলিউডে পা দিলেও, মেয়েরা সিনেমার থেকে দূরে থেকেছেন।
তবে বলিউডে পা রাখার পর, সিনেপর্দার সঙ্গে সঙ্গে বাস্তব জীবনেও সুপারহিট হয় ধর্মেন্দ্র ও হেমার জুটি। শোনা যায়, ১৯৮০ সালে গোপনে হেমা মালিনীকে বিয়ে করেছিলেন ধর্মেন্দ্র। যদিও প্রথম স্ত্রী প্রকাশ করকে তিনি ডিভোর্স দিতে চাননি। এমনকী, শেষ জীবনে প্রথম স্ত্রীর কাছেই ছিলেন ধর্মেন্দ্র। অন্য়দিকে, হেমা ও ধর্মেন্দ্রর দুই কন্যা সন্তান এষা দেওল ও আহানা দেওল।
আগামী ডিসেম্বর মাসে ৯০ বছরে পা রাখতেন ধর্মেন্দ্র। ৯০ বছর বয়স হলেও, বলিউডে এখনও দাপটের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছিলেন। জয়া বচ্চন ও শাবানা আজমির সঙ্গে জুটি বেঁধে করণ জোহরে রকি অউর রানি কি প্রেমে কাহানি ছবিতে তো তাঁর অভিনয় সিনেমার পর্দায় ম্যাজিক তৈরি করেছিল। এমনকী, সদ্য প্রকাশ্যে এসেছে তাঁর ‘ইক্কিস’ ছবির ঝলক। যেখানে ধর্মেন্দ্রকে বোঝাই যায় না তাঁর নব্বই বছর বয়স। ধর্মেন্দ্র প্রয়াণ স্বাভাবিক ভাবেই বলিউডের একটি যুগের অবসান। বলিউডের হিম্যানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / মৌমিতা