আপডেট...ধুবড়িকে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে ‘নবীন বাংলা’র পোস্টার! মৌলবাদী শক্তিকে মাথা তুলতে দেব না, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব
ধুবড়ি (অসম), ১৩ জুন (হি.স.) : বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর একটি বিশেষ চক্র সামাজিক মাধ্যম এবং স্থল পর্যায়ে অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিত অ্যাজেন্ডার মাধ্যমে বাংলাদেশি মৌলবাদীরা অশান্তির পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। এর একটি জ্বলন্ত
সাংবাদিকদের সঙ্গে বার্তালাপ মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মার


ধুবড়ি (অসম), ১৩ জুন (হি.স.) : বাংলাদেশে কিছু রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর একটি বিশেষ চক্র সামাজিক মাধ্যম এবং স্থল পর্যায়ে অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পরিকল্পিত অ্যাজেন্ডার মাধ্যমে বাংলাদেশি মৌলবাদীরা অশান্তির পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। এর একটি জ্বলন্ত উদাহরণ ধুবড়ির হনুমান মন্দিরে গরুর কাটা মাথা রাখার ঘটনা। ‘নবীন বাংলা’র নামে অখ্যাত একটি সংগঠন ধুবড়িকে বাংলাদেশের মানচিত্রে ঢোকানোর চেষ্টা শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে, এই সরকার কোনও অবস্থায় অপশক্তিকে মাথা তুলতে দেবে না, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।

সদ্যসমাপ্ত ঈদ-উদ-জোহার পর ধুবড়িতে একটি দুষ্টচক্র সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে দাঙ্গা বাঁধানোর চেষ্টা করছে। ধুবড়ির সার্বিক এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যক্তিগতভাবে পর্যালোচনা করতে আজ শুক্রবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা ধুবড়ি আসেন। সার্কিট হাউসে তিনি জেলার সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চস্তরীয় পর্যালোচনা সভায় বসেন। সভায় ছিলেন মুখ্যসচিব ড. রবি কোটা, পুলিশ-প্রধান হরমিত সিং, ডিআইজি, আইজিপি।

সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা সাম্প্ৰদায়িক সম্প্ৰীতি ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপের কথা প্রকাশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ধুবড়িতে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টিকারী কাউকে সন্দেহজনক মনে করলে পুলিশকে আমি দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছি।’

আরেকটি উদ্বেগজনক তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত বছরগুলিতে বকরি ঈদে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যে যার মতো মাংস এনে খেয়েছেন। কিন্তু এবার পশ্চিমবঙ্গ থেকে হাজার হাজার গরু ধুবড়ি আনা হয়েছে। গরু আমদানি এবং মাংস বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বলেন মুখ্যমন্ত্রী।

ধুবড়ি জেলার সাম্প্রতিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্ৰকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী এ ধরনের কার্যকলাপকে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা উস্কে দেওয়ার একটি সংগঠিত প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এবার ঈদে কিছু সমাজবিরোধী ধুবড়ির হনুমান মন্দিরে গরুর মাথা রেখে দিয়ে এক জঘন্য ও নিন্দনীয় অপরাধ করেছে! পরের ঈদে প্রয়োজন হলে আমি নিজে সারা রাত হনুমানমন্দির পাহারা দেব।’

বকরি ঈদের পর বেশ কয়েকটি অপ্ৰীতিকর ঘটনার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বকরি ঈদের পরের দিন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা হনুমান মন্দিরের সামনে একটি কাটা গরুর মাথা রেখেছিল। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের বিচক্ষণ ও নেতাস্তরের ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে একটি শান্তি কমিটি করা হয়। মনে করা হয়েছিল পরিস্থিতির সমাধান হয়ে গেছে। কিন্তু না, পরের দিন একই স্থানে আরেকটি গরুর মাথা রাখা হয়। ফলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।’ তিনি বলেন, এ ঘটনার পর কয়েকটি এলাকায় পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদকে আরও উস্কে দেওয়া হয়।

একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য’ দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ড. শৰ্মা বলেন, ঈদের আগের দিন ধুবড়ির কিছু এলাকায় ‘নবীন বাংলা’ নামে কোনও এক অজ্ঞাত অখ্যাত গোষ্ঠীর নামে পোস্টার সাঁটা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তিনটি পোস্টার দেখা গেছে, যেগুলোর মধ্যে উস্কানিমূলক কবিতা এবং ধুবড়িকে বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি পোস্টার সেনাবাহিনীর সিগন্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচারেও সেঁটেছিল দুষ্কৃতীরা।’ মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য ‘নবীন বাংলা’র বাংলাভাষায় রচিত কবিতা পড়ে শুনিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, ‘শান্তি বিঘ্নিত করতে একটি সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এই অঞ্চলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমি থাকা অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং সকল সাম্প্রদায়িক শক্তিকে দুরমুশ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্পষ্ট বার্তা, সমাজকে বিভক্ত করার বা সম্প্রীতি নষ্ট করার প্রচেষ্টা অসম সহ্য করবে না। রাতে সন্দেহজনক কাউকে দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছি। যে পাথর ছুঁড়বে বা ঝামেলা সৃষ্টি করবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, জেলা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, সংবেদনশীল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আধাসামরিক বাহিনী এবং রেপিড অ্যাকশন ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসন নাগরিকদের শান্ত থাকতে এবং উস্কানির শিকার না হতে আবেদন জানিয়েছে।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande