ধুবড়ি (অসম), ১৪ জুন (হি.স.) : মৌলবাদী শক্তিকে মাথা তুলতে দেবেন না, গো-মাংস মামলায় ধুবড়ির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গতকাল শুক্ৰবার ধুবড়ি এসে হুংকার দিয়ে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। গতকালই গো-মাংসভিত্তিক অশান্তি সৃষ্টিকারী সন্দেহজনক দুষ্কৃতীদের ‘দেখামাত্র গুলি’ এবং জেলার সমস্ত ‘দাগি অপরাধীদের’ অবিলম্বে গ্রেফতারের কড়া নির্দেশ দিয়েছিলন ড. শর্মা। নির্দেশের পর গতকাল গোটা রাত এবং আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত ধুবড়ি জেলার অন্তর্গত বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গো-মাংস সম্পৰ্কিত ৩৮ জন অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধুবড়িতে ক্ৰিমিন্যাল পাকড়াও অভিযান তীব্ৰ করেছে পুলিশ। আজ নিজের অফিশিয়াল এক্স হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্ৰী ড. হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা জানান, গতকাল রাত থেকে ধুবড়ির গো-মাংসকেন্দ্ৰিক মামলায় ৩৮ জনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। ধুবড়িতে সংগঠিত এই কুকৰ্মকে নিয়ে তিনি অতি চিন্তিত, বলেছেন সোশাল মিডিয়া এক্স-এ।
নিম্ন অসমের ধুবড়িতে সদ্যসমাপ্ত বকরি ঈদের পর একটি দুষ্টচক্র হনুমান মন্দিরে পর পর দুদিন গরুর কাটা মাথা এবং বিভিন্ন এলাকায় গরুর অঙ্গপ্রত্যক্ষ ফেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্ৰীতি ক্ষুণ্ণ করতে উঠে-পড়ে লেগেছে। ধুবড়ি জেলায় পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া সহ যে কোনও অপ্ৰীতিকর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পুলিশকে খোলাহাত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাতে কাউকে সন্দেহজনক মনে করলে পুলিশকে ‘দেখামাত্র গুলি’ করার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা। মুখ্যমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মৌলবাদী শক্তির টাৰ্গেট ধুবড়ি। আমি কখনও মৌলবাদীদের দাপাদাপি চলতে দেব না।’
মুখ্যমন্ত্রী প্রদত্ত নির্দেশের বারো ঘণ্টার মধ্যে অ্যাকশন মুডে ময়দানে নেমেছে ধুবড়ি জেলা পুলিশ। পুরনো মামলা এবং নতুন অপরাধের সঙ্গে জড়িত আটটি থানা এলাকা থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা ধুবড়ি সদর থানা এলাকার চার, গৌরীপুর থানা এলাকার সাত, গোলকগঞ্জ থানা এলাকার পাঁচ, আগমণি থানা এলাকার এক, তামারহাট থানা এলাকার পাঁচ, বিলাসীপাড়া থানা এলাকার এক, চাপর থেকে তিন, সাপটগ্ৰাম থানা এলাকা থেকে পাঁচ এবং আরও সাতজন।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর নিৰ্দেশে ধুবড়ি জেলা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, সংবেদনশীল এলাকায় পুলিশের সঙ্গে আধাসামরিক বাহিনী এবং রেপিড অ্যাকশন ফোর্স (আরএএফ, রেফ) মোতায়েন করা হয়েছে।
গতকাল রাত থেকে আইজিপি (আইন-শৃঙ্খলা) অখিলেশ কুমার সিঙের নেতৃত্বে ব্যাপক টহল অভিযান চলে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাইরেন বাজিয়ে নাগরিকদের শান্ত থাকতে এবং উস্কানির শিকার না হয়ে সজাগ থাকার আবেদন জানানো হয়েছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস