বক্সনগর (ত্রিপুরা), ১৫ জুন (হি.স.) : সিপাহীজলা জেলার সীমান্তবর্তী যাত্রাপুর গ্রামে মানবিকতার এক অনন্য নজির গড়ে তুললেন পঞ্চায়েতের প্রধান খলিলুর রহমান ও উপপ্রধান খোকন কর্মকার। উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা যে সত্যিকার অর্থেই তাঁদের কার্যক্রমে প্রতিফলিত হয়, তারই এক দৃষ্টান্ত দেখা গেল রবিবার।
পঞ্চায়েতের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী অবিবাহিত যুবক বিকাশ পাল দীর্ঘদিন ধরে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। সম্প্রতি চিকিৎসা পরীক্ষায় ধরা পড়ে—তার দুটি কিডনিই সম্পূর্ণরূপে বিকল হয়ে গেছে। অথচ জীবনের চরম এই লড়াইয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই। বহু বছর আগে বাবা-মা দু’জনেই প্রয়াত হন। পরিবার বলতে শুধু এক ছোট বোন, যিনি বিবাহিত এবং এক কাকা, যিনি নিজেও অর্থকষ্টে দিন কাটান।
জীবনের কঠিনতম এই সময়ে বিকাশ আশ্রয় খুঁজেছেন পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানের কাছে। আর তার সেই আস্থা বিফলে যায়নি। রবিবার দুপুরে প্রধান খলিলুর রহমান এবং উপপ্রধান খোকন কর্মকার বিকাশের বাড়িতে পৌঁছে নিজ হাতে তুলে দেন ১০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য। সঙ্গে দেন আশ্বাস—চেষ্টা করা হবে আরও সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার।
এই মুহূর্তে বিকাশের বাড়িতে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। উপস্থিত ছিলেন তাঁর বোন ও কাকা। দু’জনেই কেঁদে ফেলেন এই অপ্রত্যাশিত সহানুভূতির সাক্ষী হয়ে। বিকাশের কাকা কান্নাজড়ানো কণ্ঠে বলেন, “আমার ভাই-বৌদি বহু আগেই চলে গেছে। এখন একমাত্র ভাতিজাও জীবনের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। আমি আর কী করব? আপনারাই ভগবানের দূত হয়ে এসেছেন আমাদের পাশে।”
এই ঘটনার মাধ্যমে প্রমাণ হল, রাজনীতির আসল উদ্দেশ্য মানুষের পাশে থাকা। যাত্রাপুর পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান আজ শুধু একজন অসুস্থ যুবককে আর্থিক সহায়তা দেননি, মানবতার এক নির্ভরযোগ্য আশ্রয়ে পরিণত হয়েছেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ