কলকাতা, ২০ জুন (হি.স.): দ্য নেতাজী সুভাষ ইউনিভার্সিটি অফ স্পোর্টস আ্যন্ড এন্টারপ্রেনারশিপ বিল - ২০২৫ আলোচনার শুরুতেই শাসকদলের বিধায়কদের তুমুল হৈ-হট্টগোলে নিজের বক্তব্য পেশ করতে পারলেন না বিরোধী দল বিজেপি'র মুখ্য সচেতক ডঃ শঙ্কর ঘোষ। শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় এই বিলের আলোচনার প্রথন বক্তা হিসেবে বিজেপি বিধায়ক ডঃ শঙ্কর ঘোষকে কার্যত বাধাদান করেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়করা। বিধানসভার বর্ষাকালীন অধিবেশনের দশম দিনে এই ঘটনা বিরল বলে মনে করেন বিজেপি বিধায়করা। শুক্রবার দ্বিতীয়ার্ধের সভায় তখন - দ্য নেতাজী সুভাষ ইউনিভার্সিটি অফ স্পোর্টস আ্যন্ড এন্টারপ্রেনারশিপ বিল - ২০২৫ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে এমন সময়েই বিপত্তি। ফের বিধানসভার দ্বিতীয়ার্ধে হৈ-হট্টগোল এবং বক্তব্যে বাধাদান করেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়করা। তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য, সভায় পুরো সময় থাকতে হবে নচেৎ তাঁর কথা এই সভায় শোনা হবে না। এই দাবির স্বপক্ষে অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যায়ও বিরোধী দলের বক্তার উদ্দেশ্য সভাকে আশ্বস্ত করে জানান, আপনি তো দলের মুখ্য সচেতক। নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন। সুতরাং সদস্যদের সভা ছেড়ে যেতে নিষেধ করুন। যদিও বিজেপি'র মুখ্য সচেতক ডঃ শঙ্কর ঘোষসভায় জানান, শর্ত বেঁধে দিলে তো খুব মুশকিল। গণতন্ত্রের পীঠস্থান অথচ বিরোধী দলকে কিভাবে চলতে হবে তা শেখানো হচ্ছে। নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর লেখা উল্লেখ করে সভায় জানান, - এ তো সেই রাজা তোর কাপড় কোথায়! এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারের কাপড় নেই। সব খুলে পড়েছে। এই নিয়ে বাদানুবাদ চলে দুই পক্ষের মধ্যেই প্রায় ২০ মিনিটের কাছাকাছি।
উল্লেখ্য, গতকালের পর এদিন ও তাঁর বক্তব্য কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, মন্ত্রী থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক সদস্য আসন ছেড়ে নেমে যান ওয়েলে। মন্ত্রী বেচারাম মান্না মুখে বিকট শব্দ করেন সভায়। মহিলা বিধায়কদের মধ্যে - অসীমা পাত্র, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভলি মৈত্র, ফিরদৌসী রহমান, ডঃ করবী মান্না, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ বক্তব্য রাখার সময় চিৎকার করেন। এরপর অধ্যক্ষের তরফেও বারবার সভা চালাতে সকলের সহযোগিতা চাইলেও ট্রেজারি বেঞ্চেই হট্টগোল বেঁধে যায়। বিরোধীরা এই ঘটনায় হতবাক। শেষপর্যন্ত হাল ছেড়ে দিয়ে শঙ্কর ঘোষ সহ ১০ জন বিধায়ক সভা ছেড়ে বাইরে চলে যান। এরপর বিরোধীদের অনুপস্থিতিতে ওই বিল নিয়ে একতরফা এর সমর্থনে বক্তব্য রাখেন শাসকদলের ছয়জন সদস্য। অধ্যক্ষ এদিনের ঘটনা নিয়ে কোনওরকম রাখডাক না করে সবিস্তারে এ জন্য দুঃখপ্রকাশ করে সভায় মর্যাদারক্ষা করার দায়িত্ব সকলের ফের তা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। অসন্তুষ্ট অধ্যক্ষ এ নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলেও উষ্মা প্রকাশও করেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / শুভদ্যুতি দত্ত