কলকাতা, ২০ জুন (হি.স.): সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দেখা করতে এসে তাঁর বাড়ির কাছেই শুক্রবার বিকেলে বিজেপির রাজ্য সভাপতির সঙ্গে আটক হন চিকিৎসক রজতশুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধ্যার পর লালবাজার থেকে ছাড়া পেয়েই ক্ষোভ উগরে দিলেন ।

কেন গ্রেফতার করা হয়েছিল ? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাকে এই মুহূর্তে ছেড়ে দেওয়া হল। গ্রেফতারি নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। দেখুন ২৫ বছর একটা সভ্য সুশিক্ষিত দেশে ছিলাম তো! আমার এরকম অভিজ্ঞতা হয়নি যে, আমার বাড়িতে কেউ দেখা করতে আসবে, তার সঙ্গে গিয়ে আমার দেখা করতে হবে পুলিশ কর্ডনের মাঝে ! আবার তিনি একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি (সুকান্ত মজুমদার)।

রজতশুভ্রবাবু সংবাদমাধ্যমে বলেন, “তিনি একজন মন্ত্রী। আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ায়, মাঝখান থেকে চোর পকেটমারের মতো তুলে নিয়ে গেল ! আমি এখন হাসিমুখে থাকলেও প্যানিকড রয়েছি। আমি ভীষণ অসুস্থ বোধ করছিলাম। যেভাবে আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়েছে, কোন ভদ্র মানুষকে এভাবে নেয় না। শুনুন আমি একজন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক। আমি ইংল্যান্ডে উচ্চতম পদে কাজ করে এসেছি। সেই খান থেকে এই হেনস্তা..' !

কেলগ কলেজে আমি তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করেছি।..আমার জামাটা সাদা বললে সাদা মেনে নিতে হবে ! এখানে সবাইকে লেজ নেড়ে বলতে হবে সাদা। সত্য কথা। আমি ওখানে প্রশ্ন করেছিলাম। উনি জবাব দিতে পারেননি। পাশ থেকে ওকে কে কী বলেছে, আক্রমণ করেছে,..আক্রমণ তো ফেস করতেই হবে।

চিকিৎসকের অভিযোগ, সেই ঘটনারই পরই পাল্টা তাঁকে 'হ্যারাস' করা হচ্ছে। ওই জন্য মেডিক্যাল কাউন্সিল চিঠি দিচ্ছে। আরও হয়তো ১০ টা চিঠি আসবে। চিঠি দিয়ে তো কোনও লাভ নেই। আমি প্র্যাকটিসই করি না। আপনি আমার কীসের রেজিস্ট্রেশন ধরবেন ?'

তিনি আরও গুরুতর অভিযোগ তোলেন এদিন। বলেন, আমাকে গ্রেফতার শুধু করেনি, জঘন্যভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে ফিজিক্যালি অ্যাসল্ট করেছে।.. আমি বিজেপির লিগ্যাল সেলকে বলেছি। বিজেপি আমাকে সাহায্য করবে এব্যাপারে। কোর্টে তো নিশ্চয়ই যাব।'

সঙ্গে স্পষ্ট করে দেন। আমি ব্রিটিশ নাগরিক। আমি কিন্তু ভারতীয় নাগরিক নই। আমার পাসপোর্ট ব্রিটিশ। আজকে ওরা যেটা আমার সঙ্গে করেছে, তার ওদের জবাব দিতে হবে।'

চিকিৎসকের সংযোজন, 'আমি ইংল্যান্ডে নিশ্চয়ই যাব। তবে দেশ ছাড়ব না।' তিনি একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাতি, এপ্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। কিন্তু আমার দাদু আমায় শিখিয়ে গিয়েছিলেন, মরতে দম তক। বন্দে মাতরম। হাতে গীতা। উনি ফাঁসিকে ভয় পাননি। ইন্দিরা গান্ধীকে দেখেছি। পায়ে এসে প্রণাম করেছেন দাদুকে। আমি সেই বংশের ছেলে। মান্না দে-র ছাত্র। দেখে নেব।'

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত