দুর্গাপুর, ২০ জুন (হি.স.): যন্ত্রনার আর এক নাম শুভেন্দু অধিকারী। নম্বর ১ ৯৫৬। ২০২১ সালে মমতাকে হারিয়েছি। ২০২৬ সালে তৃণমূলকে হারাবো। শুক্রবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের কালো পতাকা দেখানোর পাল্টা জবাব এভাবেই দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে এদিন রাজ্য সেচমন্ত্রী মানস ভু়ঁইঞার কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার অভিযোগের জবাব দেন তিনি।
প্রসঙ্গত,পলি জমে নাবত্যা কমেছে দুর্গাপুর ব্যারেজের। কমছে জলধারন ক্ষমতা। ভারি বর্ষা হলেও জল ছাড়তে হয়। আর তাতেই দামোদর নিম্ন আববাহিকায় বন্যা দেখা দেয়। সঙ্কটে পর্যাপ্ত জল অমিল। আবার অতিবৃষ্টিতে জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি। সব মিলিয়ে রাজ্যের সাঁড়াশি আক্রমনের মুখে পড়ে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন(ডিভিসি)। গতবছর রাজ্যে দফায় দফায় নিম্নচাপের দরুন প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। তার দরুন পশ্চিমবঙ্গে দামোদর উপত্যকায় জারি হয় লাল সতর্কতা। মাসখানেক আগে ঝাড়খন্ডে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়া মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়। ওই জল দুর্গাপুর ব্যারেজে ঢুকতেই দামোদর আববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়। দুর্গাপুর ব্যারেজে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে হয়। ওই জলে দামোদর নিম্ন আববাহিকা বাঁকুড়ার মানাচর, হাওড়া, হুগলি জেলায় বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়।
আর এই প্লাবনে কার্যত ডিভিসির দিকে 'ম্যানমেড' বন্যার তকমা লাগিয়ে অভিযোগের আঙ্গুল তোলে রাজ্য সরকার। এমনকি ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যগের কথাও ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ব্যারেজের পলি সংস্কার নিয়ে জোরাল প্রশ্ন ওঠে রাজ্য সরকারের ভুমিকায়। কারন, দুর্গাপুর ব্যারেজের দেখভালের দায়িত্ব রাজ্য সেচ দফতরে। সভ্যাতার অগ্রগতির সঙ্গে ব্যারেজের আধুনিকিকরনের প্রয়োজন হয়ে ওঠে। তবে বর্ষায় ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া ও নিম্ন দামোদর উপকুলবর্তী বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া নিয়ে একই প্রশ্ন ওঠে। সেটা হল ব্যারেজের পলি সংস্কার। শুক্রবার ব্যারেজের নবনির্মিত রাস্তা খতিয়ে দেখতে এসে আবারও কেন্দ্র সরকারের দিকে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন রাজ্য সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইঞা। এদিন তিনি বলেন, ২০১৫ সাল থেকে কেন্দ্র সরকারের কোন সহায়তা পাইনি। মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব ২১ হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এখন ১ লক্ষ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রেভিনিউ আসে। যেটুকু টাকা সংগ্রহ করতে পারেন, সেই টাকা দিয়ে কাজ করেন মুখ্যমন্ত্রী। একটা নয়া পয়সা কেন্দ্র সরকার দেয়নি। এদিন আসানসোলে পশ্চিমবঙ্গ দিবস অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন সেচমন্ত্রীর মন্তব্যের পাল্টা জবাবে আসানসোল থেকে শুভেন্দু বাবু বলেন, উনি কি করেছেন? উনার সরকার কি করেছেন? উনার মুখ্যমন্ত্রীতো ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করব বলেছিলেন। সেটা করল না কেন? তিনি বলেন, সম্পর্ক ছিন্ন করলে পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া সহ বিস্তির্ন এলাকা নিস্প্রদীপ হয়ে যাবে। উল্লেখ্য এদিন আসানসোল যাওয়ার পথে দুর্গাপুর ভিড়িঙ্গি মোড়ে জাতীয়সড়কের ওপর শুভেন্দু অধিকারীকে কালো পতাকা দেখায় তৃণমূলকর্মীরা। তার জবাবে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ভালো। যন্ত্রনার আর এক নাম শুভেন্দু অধিকারী। নম্বর ১ নয়, ৫৬। ২০২১ মমতাকে হারিয়েছি। ২০২৬ সালে তৃণমূলকে হারাবো।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা