আপডেট...মায়ানমারে নিষিদ্ধ উগ্ৰপন্থী সংগঠন আলফা-আই ক্যাম্পে ড্রোন হামলার ঘটনা অস্বীকার ভারতীয় সেনার
‘বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’, হুংকার আলফা-স্বাধীনের গুয়াহাটি, ১৩ জুলাই (হি.স.) : মায়ানমারে নিষিদ্ধ ‘ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম-ইন্ডিপেনডেন্ট (আলফা-আই)-এর শিবিরে ড্রোন হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। আজ রবি
আলফা (আই)-র প্রেস বিবৃতি এবং প্রতিনিধিত্বমূলক সেনার ছবি


‘বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’, হুংকার আলফা-স্বাধীনের

গুয়াহাটি, ১৩ জুলাই (হি.স.) : মায়ানমারে নিষিদ্ধ ‘ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম-ইন্ডিপেনডেন্ট (আলফা-আই)-এর শিবিরে ড্রোন হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

আজ রবিবার সকালে নিষিদ্ধ উগ্রপন্থী সংগঠন আলফা (আই)-র সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট, প্রচার বিভাগের সহকারী সম্পাদক ঈশান অসমের জারিকৃত এক প্রেস বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, আজ (১৩ জুলাই) ভোররাত ০২:০০টা থেকে ০৪:০০টা পর্যন্ত মায়ানমারে আলফা-স্বাধীন (আলফা-আই), এনএসসিএন (কে) এবং পিএলএ ক্যাম্পে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এতে আলফা (আই)-র তিন শীর্ষ নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (স্বঘোষিত) নয়ন অসম, কৰ্ণেল প্ৰদীপ অসম এবং ব্রিগেডিয়ার গণেশ অসম সহ ১৯ জন নিহত এবং ১৯ জন ক্যাডার আহত হয়েছে। এমন-কি নয়ন অসমের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সময়ও নাকি ভারতীয় সেনা বাহিনী একটি ক্ষেপণাস্ত্ৰ হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছে পরেশ বরুয়া নেতৃত্বাধীন নিষিদ্ধ উগ্ৰপন্থী সংগঠন আলফা (আই)। প্রেস বিবৃতিতে ঈশান অসম হুংকার দিয়ে বলেছে, ‘ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের এই বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিশোধ নিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’ জঙ্গি সংগঠনের বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, এভাবে আলফা (আই)-কে নিঃশেষ করা যাবে না।

মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের অভ্যন্তরে অবস্থিত অসম, নাগাল্যান্ড এবং মণিপুরের উগ্রপন্থী সংগঠন যথাক্রমে ‘ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম-ইন্ডিপেনডেন্ট’ (আলফা-আই), ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড-খাপলাং গোষ্ঠী’ (এনএসসিএন-কে) এবং মণিপুরের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’ (পিএলএ)-র চার-চারটি শিবিরে ভারতীয় সেনাবাহিনী প্ৰায় ১০০টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করেছে আলফা (আই)।

এদিকে মায়ানমারে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে ড্রোন হামলা চালানোর কথা সরাসরি অস্বীকার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জনসংযোগ আধিকারিক (গুয়াহাটি) লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মহেন্দ্র রাওয়াত আলফা (আই)-র অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আলফা (আই)-র এই দাবি অসার। এ ধরনের অভিযান সম্পৰ্কে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে কোনও ইনপুট নেই।’

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, আজ সকালে আচমকা ‘আলফা-আই এক প্রেস বিবৃতি জারি করে দাবি করেছিল, মায়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ভারতীয় সেনা আজ ভোররাত দুটো থেকে চারটা পর্যন্ত ভারত-মায়ানমার সীমান্তবৰ্তী নাগা স্বশাসিত অঞ্চলে (মায়ানমার ভূখণ্ডে) অবস্থিত তাদের আস্তানাগুলিকে লক্ষ্য করে ড্ৰোন হামলা করেছে। প্রথম লক্ষ্য ছিল ওয়াকথাম বস্তিতে অবস্থিত আলফা (আই)-র ৭৭৯ ক্যাম্প।

পৃথক আরও এক তীব্র হামলা চালানো হয় সাগাইং অঞ্চলের হয়াত বস্তিতে অবস্থিত আলফা (আই)-র ‘ইস্টার্ন কমান্ড হেডকোয়ার্টার’ (ইসিএইচকিউ)-কে লক্ষ্য করে। ইসিএইচকিউ-এ তাদের (আলফা-আই) শীর্ষ নেতা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (স্বঘোষিত) ৫৮ বছর বয়সি নয়ন মেধি, ওরফে নয়ন অসম হামলায় নিহত হয়েছে। প্ৰসঙ্গত, নয়ন মেধি (নয়ন অসম) অসমের তদানীন্তন বরপেটা জেলা (অধুনা বজালি)-র বাসিন্দা। এছাড়া ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছে চড়াইদেও জেলা (অসম)-র বাঁশবাড়ির বাসিন্দা স্বয়ম্ভু ব্রিগেডিয়ার গণেশ লাহন ওরফে গণেশ অসম এবং একই জেলার অন্তৰ্গত সোনারির হাওফাও গ্রামের প্ৰদীপ অসম সহ ১৯ জন ক্যাডার। আহত হয়েছে আরও ১৯ জন ক্যাডার।

প্ৰসঙ্গত, নয়ন অসম-এর স্থান আলফা-আই-এর সর্বেসর্বা পরেশ বরুয়ার পরই। নয়ন অসমকে নিষিদ্ধ উগ্ৰপন্থী সংগঠনের একজন প্রধান কৌশলবিদ এবং সামরিক প্রশিক্ষক হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

বিবৃতিতে আরও দাবি করা হয়েছে, ড্রোন অপারেশন আশপাশের বেশ কয়েকটি এনএসসিএন (কে) শিবিরেও চালানো হয়েছে। এতে নাগা এবং মণিপুরের জঙ্গি গোষ্ঠীর একাধিক ক্যাডার হতাহত হয়েছে। ড্ৰোন হামলায় আলফা (আই)-র আরাকান ক্যাম্পের বিস্তর ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে জঙ্গি সংগঠনটি।

উল্লেখ্য, পরেশ বরুয়া নেতৃত্বাধীন আলফা (আই)-এ এখন কেবলমাত্র একজন সিনিয়র নেতা অরুণোদয় দোহাতিয়া রয়েছেন। তিনি আছেন মায়ানমারের কোনও এক শিবিরে। এছাড়া আরেক সিনিয়র আলফা (আই) কমান্ডার রূপম অসমকে গত মে মাসে আসাম পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande