কুমারঘাট (ত্রিপুরা), ১৬ অক্টোবর (হি.স.) : আসছে আলোর উৎসব দীপাবলি। পুজোর আগে মাটির প্রদীপ তৈরিতে এখন তুঙ্গে ব্যস্ততা মৃৎশিল্পীদের। উনকোটি জেলার ফটিকরায়ের পূর্ব রাতাছড়া গ্রামে দেখা গেছে, প্রবীণ মৃৎশিল্পী পবিত্র রুদ্রপালসহ কয়েকজন শিল্পী দীপাবলির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।
প্রবীণ মৃৎশিল্পী পবিত্র রুদ্রপাল জানিয়েছেন, “দীপাবলির আগে প্রদীপ ও অন্যান্য পূজার সরঞ্জাম তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। শুধু প্রদীপ নয়, মাটির ঘট, ধুনুচি, কাইসহ পূজার বিভিন্ন সামগ্রীও তৈরি করি।” তিনি জানান, আধুনিকতার ছোঁয়ায় মাটির প্রদীপের চাহিদা কমে গেছে। বাজারে এখন রঙিন আলোকসজ্জা ও মোমবাতি বেশি জনপ্রিয়।
পবিত্র রুদ্রপাল বলেন, “আমি বিগত ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। বাবার কাছ থেকে এই কাজ শিখেছি। কুমারঘাট, ফটিকরায়, কাঞ্চনবাড়ি সহ আশপাশের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করি। তবে বর্ষার সময় কাজ কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়। পুজোর সময় চাপ বেড়ে যায়।” তিনি সরকারি কিছু সাহায্যের আবেদনও করেছেন, যাতে এই প্রাচীন পেশা টিকিয়ে রাখা সহজ হয়।
গ্রামের আরও এক মৃৎশিল্পী স্বপন রুদ্রপাল জানান, “দীপাবলির জন্য গত বছর ৫ হাজার মাটির প্রদীপ তৈরি করেছিলাম। এবছরও সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছি। তবে এখনও পর্যন্ত তিন হাজার প্রদীপও তৈরি হয়নি।” তিনি আক্ষেপের সুরে জানান, বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা মাটির শিল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে এই পেশা টিকিয়ে রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্রাচীন মাটির প্রদীপের কদর কমে গেছে, তবুও কুমারঘাটের কয়েকজন নিপুণ মৃৎশিল্পী দীপাবলির রাতকে আলোকিত রাখতে এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। তাঁদের হাতের তৈরি প্রদীপ এখনও অনেক জায়গায় দীপাবলির অন্ধকারকে আলোকিত করে।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ