শিলচর (অসম), ৭ অক্টোবর (হি.স.) : অসম সরকারের গর্বের জনকল্যাণমূলক প্রকল্প অরুণোদয় ৩.০ মঙ্গলবার সারা রাজ্যে উদ্দীপনার সাথে শুভ সূচনা হয়েছে। মহিলাদের আর্থিক সশক্তিকরণ এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রকল্পের উদ্বোধন কাছাড় জেলার ১,৫৭৫টি পোলিং স্টেশনে একসঙ্গে উদযাপিত হয়েছে।
আজ সকাল ১০.৩০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা পর্যায়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয়। উদ্বোধনের দিনেই ১.৮৩ লক্ষ সুবিধাপ্রাপকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১,২৫০ টাকা করে প্রথম কিস্তি জমা করা হয়েছে।
গুয়াহাটিতে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার লাইভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় সুবিধাপ্রাপকগণ ঐতিহাসিক ক্ষণ প্রত্যক্ষ করতে পেরেছেন। কাছাড়ের মেহেরপুর দুর্গাবাড়ি কেন্দ্রের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলার অভিভাবক মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া। তিনি ব্যক্তিগতভাবে সুবিধাপ্রাপকদের সঙ্গে বার্তালাপ করে তাঁদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য সরকারের পদক্ষেপকে উদ্দীপক হিসেবে উল্লেখ করেন।
জেলা প্রশাসনের সহায়তায় এই অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক মৃদুল যাদব এবং অন্যান্য বরিষ্ঠ আধিকারিকগণ।
দিনের শুরুতেই মন্ত্রী বুথ নং ২২, দুর্গাপল্লি, চাতলা মণ্ডল, বড়খলা বিধানসভা কেন্দ্রে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অরুণোদয় ৩.০ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া প্রদত্ত ভাষণে বলেন, ‘অরুণোদয় যাত্রা ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়েছিল। প্রথমে উপভোক্তারা প্রতি মাসে ৮৩০ টাকা করে পাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তা ১,০০০ টাকায় উন্নীত হয় এবং বর্তমান পর্যায়ে অরুণোদয় ৩.০-এ তা বেড়ে হয়েছে ১,২৫০ টালা।’
মন্ত্ৰী আরও বলেন, ‘এবারের উদ্যোগে সমগ্র অসমে ৪০ লক্ষ মহিলাকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার লক্ষ্য ধার্য করা হয়েছিল। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ উপভোক্তা মহিলাকে স্বচ্ছ বুথ কমিটির মাধ্যমে বাছাই করা হয়েছে।’
জোর দিয়ে মন্ত্ৰী বলেন, ‘অরুণোদয় প্রকল্পে কোনও দুর্নীতি বা মধ্যস্থতার স্থান নেই। প্রতিটি টাকা সরাসরি উপভোক্তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়।’ বড়খলা বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ২৫,৯৮০ জন মহিলা সুবিধাপ্রাপক এই সুবিধা পাবেন, যার মধ্যে বুথ নং ২২-এর ৯০ জন মহিলা সরাসরি উপকৃত হবেন। প্রতি মাসের ১০ তারিখ এই টাকা সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হবে।
মন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন, কিছু পরিবারের ক্ষেত্রে যেখানে একাধিক উপযুক্ত মহিলা ভিন্ন রেশন কার্ডের অধীনে আছেন, সে সব ক্ষেত্রে সাময়িক বাদ পড়লেও প্রশাসন পরবর্তী পর্যায়ে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকারের চূড়ান্ত লক্ষ্য, ‘অসমের প্রতিটি যোগ্য মহিলাকে আত্মসম্মান ও আত্মনির্ভরতার সঙ্গে বাঁচার সুযোগ করে দেওয়া।’
এর আগে স্বাগত ভাষণে জেলাশাসক মৃদুল যাদব উপস্থিত উপভোক্তাদের গুয়াহাটির খানাপাড়া থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি সম্প্রচারিত ভাষণ মনোযোগ সহকারে শোনার আহ্বান জানান। তিনি জেলার সকল কর্মী, আধিকারিক এবং বুথ স্তরের দলগুলির অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, যার ফলে সমগ্র জেলার পোলিং স্টেশনগুলোতে অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠু ও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস