
বাঁকুড়া, ৫ নভেম্বর (হি.স.) : নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এসআইআর ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে বাঁকুড়া জেলা। মঙ্গলবার থেকে জেলার বিভিন্ন ব্লকে শুরু হয়েছে এসআইআর-এর কাজ। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, সুষ্ঠুভাবে কাজ সম্পন্ন করতে প্রশাসন পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই বি.এল.ও. কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে ফর্ম বিলি করছেন এবং তা পূরণের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করছেন। তবে একাধিক জায়গায় বি.এল.ও.-দের সঙ্গে তৃণমূল কর্মী ও স্থানীয় নেতৃত্বকে দেখা গিয়েছে।
প্রথম থেকেই এসআইআর নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের জেলা কার্যালয়ে খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম, যেখান থেকে ব্লক পর্যায়ের সমন্বয় রাখা হচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইন্দপুরের গৌরবাজার অঞ্চলে তৃণমূলের একটি বৈঠকে এসআইআর নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ইন্দপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি রেজাউল খান অভিযোগ করেন, “এসআইআর-এর মাধ্যমে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত চলছে।” তিনি দলীয় কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।
অন্যদিকে, গঙ্গাজলঘাটিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে ‘এসআইআর সহায়তা কেন্দ্র’। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বড়জোড়া বিধায়ক অলোক মুখার্জি ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এদিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের বিএলএদের জন্য প্রশিক্ষণ সভার আয়োজন হয়। সভায় বাঁকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর রাজু লোহার ঢোকার পর সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে মুহূর্তে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
প্রসঙ্গত, ছাতনা, ইন্দপুর ও শালতোড়ায় আগেই ‘বাংলার ভোট রক্ষা কর্মসূচি’ শিরোনামে বিএলএ প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। দলীয় সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী প্রকাশ্যেই বলেছেন, “বিএলও কর্মীরা গ্রামে গেলে তৃণমূলের বুথ স্তরের কর্মীরাও সঙ্গে যাবেন। কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম বাদ পড়লে সঙ্গে সঙ্গে ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। গ্রামভিত্তিক নাগরিক কমিটি গড়ে তুলতে হবে নাম বাদ দেওয়ার বিরুদ্ধে।”
অরূপবাবুর আরও দাবি, সারা রাজ্যে এসআইআর-এর নামে এক কোটি বৈধ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে—যা রুখতে দল সংঘবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলবে।
অন্যদিকে, বিরোধী বিজেপি এসআইআর শুরুর দিনেই ‘লাড্ডু বিতরণ’ করে সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, দল প্রশাসনের কাছে বিএলওদের নাম ও বিশদ তথ্যের তালিকা চেয়েছে। মহকুমা শাসক ইতিমধ্যেই বিধানসভা-ভিত্তিক সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে সিপিএম নেতা প্রভাত কুসুম রায় দাবি করেন, “২০০২ সালের ভোটার তালিকার কপি সব দলকে দিতে হবে এবং কত বার বিএলওরা আসবেন সে ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে জানাতে হবে।”
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নির্ধারিত প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করা হলে ভোটার তালিকা সংশোধনে কোনও জটিলতা হবে না।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট