
বাঁকুড়া, ১৩ ডিসেম্বর (হি.স.) : বড়জোড়ার ঘুটগড়িয়া শিল্পাঞ্চলের এক বেসরকারি কারখানায় কর্মরত অবস্থায় এক শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল। শনিবার সকালের শিফটে একটি চাবি তৈরির কারখানায় কাজ করার সময় যন্ত্রের চাপে পড়ে মৃত্যু হয় সাহারজোড়া গ্রামের বাসিন্দা ১৮ বছর বয়সি শ্রমিক বিজয় ধীবর-এর।
কারখানা সূত্রে জানা গেছে, কাজের সময় দুটি যন্ত্রের মাঝে চাপা পড়ে গুরুতর আহত হন বিজয়। তড়িঘড়ি তাঁকে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তরুণ শ্রমিকের মৃত্যুতে তাঁর গ্রাম সাহারজোড়ায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
এই ঘটনার পর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। শ্রমিক নেতা তপন ধীবর, অতনু মাইতি ও পুষ্পেন দাস অভিযোগ করেন, ঘুটগড়িয়া শিল্পাঞ্চলে একের পর এক দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু হলেও কারখানাগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। সামান্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে প্রতিবারই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি।
শ্রমিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৩১ মে ঘুটগড়িয়ার একটি স্পঞ্জ আয়রন কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় দুই শ্রমিক-বিহারের বাসিন্দা রমেশ কুমার (২৬) ও মহম্মদ আজিম আলি (৩২) প্রাণ হারান। ওই ঘটনায় আহত হন আরও ১৭ জন শ্রমিক। গলিত লোহা ভর্তি ল্যাডেলের তার ছিঁড়ে প্রায় দশ ফুট নিচে পড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
শ্রমিক সংগঠনের দাবি, ওই ঘটনার এক মাস আগেই একই শিল্পাঞ্চলে নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সুজিত শিকদার (২৬)-এর মৃত্যু হয়। তারও আগে, ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে শেড থেকে পড়ে মৃত্যু হয় গদাধর মাঝি (৫৮)-র। গত বছর জুলাই মাসে গলানো লোহা ছিটকে আহত হন ৯ জন শ্রমিক।
একাধিক দুর্ঘটনার পরও কারখানা কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, ফলে ঘুটগড়িয়া শিল্পাঞ্চলে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর ঘটনা চলছেই।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট