
ঝাড়গ্রাম, ১৭ ডিসেম্বর (হি.স.): ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া থানার তাল গ্রামে মঙ্গলবার রাতে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেল একটি বাড়ি। আগুনে পুড়ে বাড়ির দোতলাতেই মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধের। মৃতের নাম মঙ্গল মল্লিক (৭২)। মর্মান্তিক এই ঘটনায় কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা মল্লিক এবং বৌমা সবিতা মল্লিক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাল গ্রামের ঘিঞ্জি এলাকায় মঙ্গল মল্লিকদের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া মাটির দোতলা বাড়িতে নিয়মিত রান্নাবান্না হত দোতলায়। সেখানে প্রচুর জ্বালানি কাঠ মজুত ছিল। মঙ্গলবার রাত প্রায় সাড়ে আটটা নাগাদ দোতলায় হঠাৎ আগুন লাগে। সেই সময় বাড়ির বাইরে ছিলেন মঙ্গলের বৌমা সবিতা মল্লিক। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তিনি কোনওক্রমে শাশুড়ি সন্ধ্যা মল্লিক ও বাড়িতে থাকা ছাগলগুলিকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসেন। তবে দোতলায় আটকে পড়েন মঙ্গল মল্লিক।
খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা পুলিশ ও দমকলে খবর দেন। ঝাড়গ্রাম থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ততক্ষণে পুরো বাড়িটি পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে যায়। পরে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মঙ্গল মল্লিককে উদ্ধার করে তপসিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার ঘটনাস্থলে পৌঁছান গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকের বিডিও রাহুল বিশ্বাস, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শর্বরী অধিকারী, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ টিঙ্কু পাল সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে শুকনো খাবার, রান্নার বাসন, কম্বল ও জামাকাপড় প্রদান করা হয়। বিডিও রাহুল বিশ্বাস জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারি বাড়ি পাওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি থানায় অভিযোগ দায়েরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গল মল্লিকের ছেলে ঝন্টু মল্লিক কর্মসূত্রে মনিপুরে থাকেন। ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ও তাঁর ছেলেরা বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। অগ্নিকাণ্ডের ফলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সবিতা মল্লিক বলেন, “আমি সেই সময় বাড়ির বাইরে ছিলাম। আগুন দেখে কোনওরকমে শাশুড়ি ও ছাগলগুলোকে বাইরে আনতে পারি। কিন্তু আগুন এতটাই ভয়াবহ ছিল যে শ্বশুরকে দোতলা থেকে বের করতে পারিনি।”
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রান্নার সময় উনুনের আগুন থেকেই দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে। তবে শর্ট সার্কিটের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। আগুন লাগার সঠিক কারণ জানতে দমকল বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / গোপেশ মাহাতো