
দুর্গাপুর, ১৭ ডিসেম্বর (হি.স.): বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এস আই আর) প্রক্রিয়ার খসড়া তালিকা প্রকাশ হতেই পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসী বিধানসভার বুদবুদ এলাকায় একাধিক বুথে শতাধিক ভোটারের হদিস না মেলায় রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এই ‘নিখোঁজ’ ভোটারদের এপিক নম্বর ব্যবহার করেই তৃণমূল কংগ্রেস এতদিন ছাপ্পা ভোট দিয়েছে।
জানা গেছে, বুদবুদের জেকেনগর প্রি-প্রাইমারি স্কুলের ১২১ নম্বর বুথে মোট ৭৭০ জন ভোটারের মধ্যে ৬৫১ জনের হদিস পাওয়া যায়নি। ৫ জন মৃত ও ৩ জন স্থায়ীভাবে অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছেন। মাত্র ১২১ জন ভোটারের এনুমারেশন সম্পন্ন হয়েছে। একইভাবে ১২২ নম্বর বুথে ৪৮০ জন ভোটারের মধ্যে ৩৯০ জনের খোঁজ মেলেনি। ১২৩ নম্বর বুথে ১৩৫ জন এবং ১২৪ নম্বর দক্ষিণ শুকডাল প্রাইমারি স্কুল বুথে ৪৩০ জন ভোটারের মধ্যে ৩৪১ জনের হদিস পাওয়া যায়নি।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট বুথগুলির বহু ভোটার একসময় পানাগড় সেনাছাউনির ভেতরে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীকালে বদলি বা অবসর নেওয়ার পর তাঁরা অন্যত্র চলে গেলেও এপিক নম্বর স্থানান্তর বা বাতিল করেননি।
১২১ নম্বর বুথের বিএলও রাজু প্রসাদ ও ১২২ নম্বর বুথের বিএলও সঞ্জিত কুমার জানান, সেনাছাউনির ভিতরে একাধিকবার শিবির করেও বহু ভোটারের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ১২৪ নম্বর বুথের বিএলও দেবলিনা মণ্ডল জানান, যাদের খোঁজ পাওয়া গেছে, তাঁদের এনুমারেশন ফর্ম জমা নেওয়া হয়েছে।
এনিয়ে বিজেপির দুর্গাপুর–বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি রমন শর্মা অভিযোগ করেন, “ভুয়ো ও নিখোঁজ ভোটার বাদ দিতেই এস আই আর চালু হয়েছে। এইসব এপিক নম্বর ব্যবহার করেই তৃণমূল কংগ্রেস ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের নির্বাচনে ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া দরকার।”
তবে বিজেপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গলসী–১ ব্লক সভাপতি জনার্দ্দন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই বুথগুলির ভোটারদের বড় অংশ সেনাছাউনিতে কর্মরত ছিলেন। অবসর বা বদলির পর এপিক স্থানান্তর না করায় এই সমস্যা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তদন্ত করলেই প্রকৃত তথ্য সামনে আসবে।”
গলসী–১ বিডিও ইন্দ্রজিৎ মারিক জানান, যেসব ভোটারের এনুমারেশন সম্পন্ন হয়েছে, তার রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা