
কলকাতা, ১৮ ডিসেম্বর (হি. স.) : সংখ্যালঘু অধিকার দিবসে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে বৃহস্পতিবার এক বার্তায় তিনি লিখেছেন যে, এটা আমার গর্ব, সংখ্যালঘু উন্নয়নে রাজ্য সরকার অভূতপূর্ব কাজ করেছে এবং করে চলেছে।
সংখ্যালঘু দফতরের পরিকল্পনা বাজেট ১০ গুণের বেশি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১০-১১ সালের ৪৭২ কোটি টাকা থেকে তা বেড়ে ২০২৫-২৬ সালে ৫ হাজার ৬০২ কোটি টাকার বেশি হয়েছে।
সংখ্যালঘু স্কলারশিপের ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে বাংলা ১ নম্বর। সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকারের টাকায় ‘ঐক্যশ্রী’ স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে প্রায় ১০ হাজার ২০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ কোটি ৮৫ লক্ষ সংখ্যালঘু স্কলারশিপ প্রদান করা হয়েছে।
দেশের ভিতরে বা বাইরে উচ্চশিক্ষার জন্য সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ দেওয়া হচ্ছে। গত প্রায় ১৫ বছরে ৪০ হাজার মতো সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীকে প্রায় ৩২৭ কোটি টাকার শিক্ষা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, রয়েছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা।
সংখ্যালঘু সহ ওবিসি ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘মেধাশ্রী’ প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
২০১১ থেকে এখনও পর্যন্ত সংখ্যালঘু যুবক যুবতী ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেম্বারদের স্বনির্ভর হবার লক্ষ্যে ১৬ লক্ষ ৩১ হাজার উপভোক্তাকে ৩ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।
MSDP প্রকল্প রূপায়ণে দেশের মধ্যে বাংলা ১ নম্বর। আমাদের দায়িত্বকালে, এই প্রকল্পে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করে সংখ্যালঘু - প্রধান এলাকায় প্রায় ২ লক্ষ পরিকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের নিজস্ব অর্থে IMDP প্রকল্পে - ১৪টি জেলার ৩২টি ব্লকের সংখ্যালঘু প্রধান এলাকায় ৭৪৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হয়েছে।
MSDP এবং IMDP ছাড়াও, আরো প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অন্যান্য সংখ্যালঘু-প্রধান এলাকায় পরিকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।
সংখ্যালঘু দুঃস্থ মহিলাদের গৃহনির্মাণের জন্য ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে মঞ্জুর করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ২ লক্ষ ৬০ হাজার ২৭ জনকে ২ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকার বেশি দেওয়া হয়েছে।
১৪টি জেলায় ইংলিশ মিডিয়াম মডেল মাদ্রাসা স্থাপন করা হচ্ছে। ৩৮টি ইন্টিগ্রেটেড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল স্থাপন করা হচ্ছে।
২৩৫টি সরকার-স্বীকৃত আনএইডেড জুনিয়র হাই মাদ্রাসাকে শিক্ষক/অশিক্ষক কর্মচারীদের মাসিক সাম্মানিক দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের টাকায় প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
এছাড়াও, আরো ৭০০টি মাদ্রাসাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই আরো ৩৬৬ টি মাদ্রাসাকে আনএইডেড মাদ্রাসা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই ৩৬৬ টি মাদ্রাসার শিক্ষক/অশিক্ষক কর্মচারীদেরকেও মাসিক সাম্মানিক দেওয়ার জন্য অর্থ সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৬৩৮টি মাইনরিটি হোস্টেল স্থাপন করা হচ্ছে। প্রত্যেক ছাত্রকে বছরে ১০ হাজার টাকা (১০০০ টাকা করে ১০ মাস) তদারকি ভাতা দেওয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি তা বাড়িয়ে বছরে ১৮ হাজার টাকা (১৮০০ টাকা করে ১০ মাস) করা হয়েছে।
মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে।
৫৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে নিউটাউনে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এবং পার্ক সার্কাসে আরো একটি ক্যাম্পাস নির্মাণ করা হয়েছে। ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নিউ টাউন ক্যাম্পাসে ছেলেদের এবং মেয়েদের জন্য আলাদা হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে।
কর্মরতা মহিলাদের জন্য কৈখালিতে - 'ঐকতান’ হোস্টেল স্থাপন করা হয়েছে।
'যোগ্যশ্রী' প্রকল্পে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রী ও কর্মপ্রার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ডাক্তারী ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির পরীক্ষা এবং সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার কোচিং দেওয়া হচ্ছে।
১০ শতাংশের বেশি উর্দু ভাষাভাষী মানুষ যেখানে রয়েছেন, সেখানে উর্দুকে সরকারি ভাষার মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। ইসলামপুর এবং আসানসোলে উর্দু অ্যাকাডেমি রিজিওনাল সেন্টার চালু করা হয়েছে।
রাজারহাট নিউটাউনে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন হজ হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরে হজযাত্রীদের সমস্ত রকম সহায়তা করা হচ্ছে।
প্রায় ৬৯ হাজার ইমাম ও মোয়াজ্জিন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ করছে।
সংখ্যালঘু উন্নয়ন পর্ষদ এবং সংখ্যালঘু স্কিল ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠন করা হয়েছে। মুর্শিদাবাদে মাইনোরিটিজ কালচারাল ডেভেলপমেন্ট সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / শুভদ্যুতি দত্ত