
দুর্গাপুর, ১৮ ডিসেম্বর (হি.স.) : পরিকল্পনার ঘাটতি ও অপরিকল্পিত নগরায়নের জেরে মুখ থুবড়ে পড়েছে কাঁকসা–বামুনাড়া শিল্পতালুকের নিকাশী ব্যবস্থা। শিল্পতালুকের জল উপচে পড়ে জাতীয় সড়কের সার্ভিস লেনে জল জমে থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও যানচালকেরা। শীতকালেও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বাঁশকোপা ও রাজবাঁধ সংলগ্ন ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের সার্ভিস লেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যৌথ পরিদর্শনে নামেন আসানসোল–দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
প্রসঙ্গত, প্রায় সাত বছর আগে বারোয়াড্ডা থেকে পানাগড় ধরলা মোড় পর্যন্ত জাতীয় সড়ক ছয় লেনে সম্প্রসারণ করা হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে উড়ালপুল, আন্ডারপাস ও সার্ভিস লেন নির্মাণের পাশাপাশি জল নিকাশীর জন্য ড্রেন ও কালভার্ট তৈরি হলেও, বাস্তবে তার সুফল মিলছে না বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা ও চালকদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেন সংস্কার না হওয়ায় নিকাশী ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। ফলে ড্রেনের জল উপচে পড়ে সার্ভিস লেন খানাখন্দে ভরে উঠছে, বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।
জানা গেছে, কাঁকসা ও বামুনাড়া শিল্পতালুকের পাশাপাশি আশপাশের গোপালপুর ও বাঁদরা গ্রামের জল জাতীয় সড়কের ড্রেনে এসে মিশছে। অথচ নিকাশীর জন্য তৈরি কালভার্টগুলির মুখ ভরাট করে অবাধে নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি জল বেরোনোর প্রাকৃতিক জলাশয়ও ভরাট হয়ে গেছে। এর জেরেই বাঁশকোপা টোলপ্লাজা সংলগ্ন সার্ভিস লেন কার্যত ‘মরণফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।
এডিডিএ চেয়ারম্যান কবি দত্ত বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ড্রেন তৈরি করেছে। তবে সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণে পার্শ্ববর্তী দোকান ও শিল্পকারখানারও দায়িত্ব রয়েছে। সমস্যা রয়েছে, সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে।”
দুর্গাপুর স্মল স্কেল ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ সম্পাদক রতন আগরওয়াল শিল্পকারখানার ওপর দোষারোপকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে বলেন, “শিল্পতালুকের ন্যূনতম পরিকাঠামো গড়ে তোলার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। বর্ষায় একাধিক কারখানা জলমগ্ন হয়ে বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছে। স্থায়ী নিকাশী সমাধান প্রয়োজন।”
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের দুর্গাপুর আঞ্চলিক শাখার আধিকারিক প্রমোদ কুমার মাহাতো জানান, “সড়কের ড্রেনে শিল্পতালুকের জল সারা বছর মিশছে। অবৈধ দখল ও আবর্জনায় ড্রেন ভরে যাওয়ায় জল বেরোচ্ছে না। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও এডিডিএকে জানানো হয়েছে।”
সব মিলিয়ে প্রশ্ন উঠছে—শিল্পতালুকের নিকাশী আউটলেট কবে বাস্তব রূপ পাবে? নাকি জলমগ্ন সার্ভিস লেনেই চলতে থাকবে সাধারণ মানুষের নিত্যযাত্রা।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা