কবরস্থান তৈরির জন্য হিন্দুর জমি দখলের অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক
অশোক সেনগুপ্ত কলকাতা, ১৯ এপ্রিল (হি.স.): বাংলাদেশে কবরস্থান তৈরির নামে এক হিন্দুর জমি দখলের অভিযোগক
কবরস্থান তৈরির জন্য হিন্দুর জমি দখলের অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক


অশোক সেনগুপ্ত

কলকাতা, ১৯ এপ্রিল (হি.স.): বাংলাদেশে কবরস্থান তৈরির নামে এক হিন্দুর জমি দখলের অভিযোগকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিতর্কে সামিল হয়েছেন মুসলমানরাও।

জমির মালিক প্রফুল্ল নাথের এই উক্তি সামাজিক মাধ্যমের দেওয়ালে ভাগ করে বিতর্ক তুলে দিয়েছেন প্রেস কাউন্সিলের বাংলাদেশের পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক সৈয়দ মনির আহমেদ। তাতে বড় হরফে লেখা “আমি জমি দান করিনি, কবরের জন্য

জনপ্রতিনিধিগণ আমার জায়গা দখল করে নিয়েছে।” এই পোস্টের দু’দিনের মধ্যে, শুক্রবার বেলা ১০টায় সামাজিক মাধ্যমে ৬০৪টি মন্তব্য এসেছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ অগ্নিবীর, রংপুর শাখার তরফে ভিডিও-তে তুলে ধরা হয়েছে ঘটনাটি। এটি শুক্রবার বেলা ১০টা পর্যন্ত দেখেছেন ১ লক্ষ ৮০ হাজার নেটনাগরিক। মন্তব্য করেছেন ১ হাজার ১০০ জন।

১৪ এপ্রিল বাংলাদেশের একটি দৈনিকে একটি সচিত্র সংবাদকে কেন্দ্র করে। তাতে লেখা— “কবরস্থানের জন্য জমি দান করলেন হিন্দু পরিবার”। সৈয়দ মনির আহমেদ সংশ্লিষ্ট ছবি দিয়ে লিখেছেন, “স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বার উপস্থিতিতে মাস্টার প্রফুল্ল নাথ এবং তার ভাইদের জমি কবরের জন্য ভরাট করা হচ্ছে। প্রথমে এক ব্যক্তির কবর দিয়ে এর সুত্রপাত হয়। যা দখলের একটি কূটকৌশল বলে মনে হচ্ছে।”

সাবেক চট্টগ্রামের অধুনা ম্যাসাচুসেটসের বাসিন্দা মিন্টু নাথ লিখেছেন, “আমাদের ভিটার সাথে লাগানো জমি জোর করে দখল করে বলে যে মসজিদ নির্মাণ করা হবে, কয়েক বছর যাওয়ার পর ঘর তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু, ঈশ্বরের কৃপায় ২ ভাই ১ বৎসরের মাঝে মারা যায়। তারা কিন্তু দখলকৃত জমিতে কোটি টাকার প্রাসাদ বানিয়ে ১দিনের জন্যও থাকতে পারে নি। আমাদের এলাকায় অনেক আলোচিত ঘটনা।

ছোট ভাইকে বড়ভাই মারা যাওয়ার পর ভাইয়ের শ্বশুরের পক্ষ ঐ রাজপ্রাসাদে ঢুকতে দেয় নি। আমাদের ঐ ঘটনায় এলাকার সব জনপ্রতিনিধি একজোট হয়েছিল, তাদের বিবেক বিক্রি হয়েছিল লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে।”

কাজী নমন লিখেছেন, “সৈয়দ মনির আহমদ কারো জায়গায় জোর করে কবর দিলে আল্লাহ তা মাপ করে কি না জানি না ? জবাবে সৈয়দ মনির আহমেদ লিখেছেন, “কোনও মাপ নাই”। আহমেদ সালিম লিখেছেন, “আসলে কোনও জনপ্রতিনিধি নাই।এরা ভোট চোর। রাতে বুট চুরি করে জোরপূর্বক জনপ্রতিনিধি দাবি করছে। এজন্যই অন্যের জমি দখল করে কবর বানিয়েছে। এই কবরে যারা শুয়ে থাকবে তাদের কখনও ক্ষমা হবে না এবং তাদের উত্তরাধিকারের কখনো ক্ষমা হবে না। সে যেই হোক হিন্দু হোক মুসলিম হোক।”

রেজাউল হক লিখেছেন, “কতোটা নির্লজ্জ হলে এমন কাজ করতে পারে। ধিক! শত ধিক!” মহম্মদ রবিউল ইসলাম লিখেছেন, “

দখলদারত্ব বজায় রাখতে হবে এটাই মুল কথা

মহম্মদ জসিমুদ্দিন লিখেছেন, “এরা জনপ্রতিনিধির কলঙ্ক। জনপ্রতিনিধি হলে তো জনস্বার্থে কাজ করবে। জনস্বার্থ বিরোধী কাজ কিভাবে করে! প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

২০১৯ সালে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ তুলে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেত্রী

প্রিয়া সাহা একটি ভিডিও প্রকাশের পর সে দেশে ব্যাপক আলোড়ন ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

তিনি লিখেছেন, “নবীকে অনুসরণ করছে তারা। সেই প্রথম দখল করে কাবা তৈরি করে।”

মিঠুন দাস লিখেছেন, “এরকম হাজারো জমিয়ে আছে দখল করে আছে যেমন আমাদের।” রাজীব কান্তি দাস লিখেছেন, “জনপ্রতিনিধি নিজে কেন জমি দান করলেন না কিংবা কবরের জন্য সরকারি জমির ব্যবস্থা করলেন না? কেনইবা হিন্দুর জমি দখল করতে হলো? খাস জমির তো অভাব নাই। পরের কবরের জন্য পরের জমি তো দখল করলেন। আপনার নিজের জন্য এক মুঠো মাটি জুটবে তো? প্রফুল্ল বাবু আপনার উদ্দেশ্যে বলছি যারা আপনার জমিটি দখল করেছে তাদের কিছু টাকাও দিয়ে রাখেন যাতে তাদের শেষকৃত্য আপনার জমিতে আপনার টাকায় হয়। অনেক নেতা দেখেছি যাদের এম্বুলেন্স ভাড়াটা চাঁদা তুলে দিতে হয়েছে। ক্ষমতা আর অর্থ ক্ষণস্থায়ী কিন্ত কর্মের ফল ভোগ নিশ্চিত।”

একটি বাংলা দৈনিকের নাম করে বিজিত রঞ্জন মহন্ত লিখেছেন, তাদেরও এর জবাবদিহির আওতায় আনা উচিৎ। তারা উভয়পক্ষের সরাসরি সাক্ষাৎ না নিয়ে প্রমাণ ছাড়া একটা খবর প্রকাশ করল কী করে?

হিন্দুস্থান সমাচার/ অশোক




 

 rajesh pande