।। রাজীব দে ।।
ঢাকা, ১ সেপ্টেম্বর (হি.স.) : বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সড়ক পরিবহণ ও সেতু, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ এবং রেল মন্ত্রালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা মহম্মদ ফাওজুল কবির খানের সাথে আজ রবিবার সকালে তাঁর সচিবালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত এইচই ইয়াও ওয়েনের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে উপদেষ্টা দু-দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক খাতে পারস্পরিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার জন্য চিনের প্রশংসা করেছেন। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত ত্যাগের ফলে গঠিত এই অন্তবর্তীকালীন সরকার দুর্নীতি, অন্যায়-অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সবসময় অনমনীয় থাকবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকার ইতিমধ্যে অনেক জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্ট (বিইআরসি)-এর ৩৪ (ক) ধারা বাদ দিয়ে গণশুনানির মাধ্যমে বিদ্যুতের দাম নির্ধারণ করা, ভবিষ্যতে বিভিন্ন কাজের দরপত্র উন্মুক্ত প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে আহ্বান করা এবং এক্ষেত্রে কারও সাথে কোনও বিশেষ চুক্তি বা সুবিধা প্রদান না করা অন্যতম বলে উল্লেখ করেন তিনি। এই সময় উপদেষ্টা বর্তমানে দেশের গ্যাস সংকট উত্তরণে জমি ভিত্তিক গ্যাস প্ল্যান্ট নির্মাণ, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি, ব্যাটারি এনার্জি স্টোরেজ সিস্টেম তৈরি ও ট্রেনের লোকোমোটিভ ক্রয়ে চিন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা কামনা করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে চিনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চিন সরকার বাংলাদেশ এবং এই দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সবসময় সহযোগিতা করে যাবে। এই সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার পাশাপাশি চিনা রাষ্ট্রদূত বিগত আমলে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করে বলেন, চিন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার এবং চিন সরকার সব সময় বাংলাদেশের জনগণের উন্নয়ন হয়, এ রকম প্রকল্পগুলোতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। তিনি চলমান চিনা প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে এই সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন।
উপদেষ্টা মহম্মদ ফাওজুল কবির খান চিনের চলমান প্রকল্পগুলোর ব্যাপারে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বস্ত করে উল্লেখ করে এই সরকার খরচ কম করে কাজের গুণগত মান বজায় রেখে গ্রাহক সেবার ওপর জোর দিয়েছেন। এছাড়া তিনি সড়ক, সেতু, রেল, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের বিভিন্ন প্রকল্পগুলোতে চিন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা কামনা করেন।
চিনা রাষ্ট্রদূত গ্রিন এনার্জি খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে বলেন এবং অন্যান্য খাতগুলোতে অগ্রাধিকারমূলক ভিত্তিতে যাচাই করে সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আর্থিক ও কারিগরি সহায়তার ব্যাপারে উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করেন।
বৈঠকে চিন দূতাবাসের কাউন্সিলার সং ইয়াং, দ্বিতীয় সচিব শি জুলিয়াং, তৃতীয় সচিব বাই ঝাওক্সি সহ মন্ত্রালয়ের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস