কলকাতা, ১৪ জানুয়ারি (হি.স.): বাঘাযতীনে বাড়ি ভাঙায় ফের প্রশ্ন উঠল কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং আইনের যথাযথ রূপায়ণে অবহেলার। মেয়র থেকে কাউন্সিলর, প্রাক্তন কাউন্সিলর— জনপ্রতিনিধিরা সকলেই গোল গোল যুক্তি দেখিয়ে দায় এড়িয়ে যেতে ব্যস্ত।
ইতিমধ্যেই বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পৌরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমে বলেন, “কলোনি এলাকায় যে যার নিজের বাড়ি করে নিচ্ছে, সেই বাড়িগুলোর স্ট্রাকচারাল স্টেবিলিটি রয়েছে কিনা, সেটা দেখা হচ্ছে না। এখানে প্ল্যান নেওয়ার নিয়মই নেই। পুরনো প্ল্যানগুলোর ক্ষেত্রেও খতিয়ে দেখা উচিত। ভাগ্য ভালো কেউ বাড়িতে ছিলেন না।”
যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, “পুরসভাকে না জানিয়েই কিছু কাজ চলছিল ওই বাড়িতে, যা বেআইনি। তাই বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে প্রশাসন।”
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৮-১০ বছর আগেকার বাড়ি। আমি ওনারদের থেকে যা শুনলাম, বাড়ির ধার দিয়ে জল নামছিল। যাঁরা নির্মাণের কাজ করেছিলেন, তাঁদেরকে ডেকেওছিলেন তাঁরা। প্রোমোটার তাঁদের আশ্বস্ত করেছিলেন বাড়ি ছাড়তে। আমরা ঠিক করে দেব। বিল্ডিংয়ে ফাটল ধরেছে বলেও শুনলাম। তারপর লোহার ট্র্যাক দিয়ে উঁচু করা হচ্ছিল। তখন আমি খবর পেয়েই যাই। সেই কাজে বাধা দিই।”
কাউন্সিলর আরও বলেন, “ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের ১-২ মাস আগেই অন্যান্য জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। তারপর লোহার ট্র্যাকশন দিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিল দুদিন আগে। কিন্তু আজকে বিল্ডিংটা পাশের বাড়িতে হেলে পড়েছে। বাইরে থেকে বিপজ্জনক দেখে বোঝা যায়নি।”
প্রাক্তন কাউন্সিলর সিপিএম-এর চয়ন ভট্টাচার্য প্রশ্ন তুলেছেন, ৮-১০ বছরের পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ছে। যিনি বানিয়েছেন, সেই ডেভলপারকে কি গ্রেফতার করা হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে, সেটা দুঃখজনক।
পুরসভা সূত্রে খবর, ১০-১১ বছর আগে তৈরি হয়েছিল ওই বহুতলটি। আগেই সেটি হেলে পড়েছিল। গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু করেন ওই ফ্ল্যাট বাড়ির প্রোমোটার। সেই কারণেই কোনও বাসিন্দাই আপাতত সেখানে থাকছিলেন না। এসবের মধ্যেই মঙ্গলবার দুপুরে ওই বাড়িতে বড় বিপর্যয় ঘটে গেল।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত