আপডেট...উমরাংসো কয়লা খাদান ট্ৰ্যাজেডি : এখনও কাউকে উদ্ধার করা যায়নি, জানান মন্ত্রী কৌশিক
উমরাংসোর প্লাবিত কয়লা খাদান থেকে এখনও কাউকে উদ্ধার করা যায়নি, জানান মন্ত্রী কৌশিক
অসমের খনি-মন্ত্রী কৌশিক রাই


উদ্ধার অভিযানে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক সরঞ্জাম


খাদানে প্রবেশ করছেন সেনা জওয়ানরা


খাদানে প্রবেশের মুহূৰ্ত


রাতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা সেনার


অবৈধ খাদান পরিচালনার অভিযোগে গ্রেফতার এক

উদ্ধারে মোতায়েন ভারতীয় পদাতিক ও বায়ুসেনা, আসাম রাইফেলস, এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ, আসছে নৌবাহিনীর ড্রিপ ড্রাইবার দল

উমরাংসো (অসম), ৭ জানুয়ারি (হি.স.) : অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা ডিমা হাসাওয়ের অন্তৰ্গত উমরাংসোতে গভীর কয়লা খাদানে আবদ্ধ কোনও শ্রমিককে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সম্মিলিতভাবে যুদ্ধগতিতে উদ্ধারকার্য চালিয়েছেন ভারতীয় পদাতিক ও বায়ুসেনা, ৩১ নম্বর আসাম রাইফেলস পাথফাইন্ডার ইউনিট-এর যৌথ বিশেষজ্ঞ বাহিনী। তাঁরা জোটবদ্ধভাবে অত্যাধুনিক সরঞ্জামের সাহায্যে উদ্ধারকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। উদ্ধার অভিযানে যৌথ সেনাবাহিনীকে সহায়তা করছে ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স’ এবং ‘স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স’ও। সংকটজনক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশাখাপত্তনম থেকে নৌবাহিনীর বিশেষজ্ঞ ডুবুরিদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে নৌবাহিনীর ড্রিপ ড্রাইবার দল রওয়ানা হয়ে গেছে, জানিয়েছেন অকুস্থলে অবস্থানরত রাজ্যের খনি ও খনিজ দফতরের মন্ত্রী কৌশিক রাই।

প্রসঙ্গত, কয়লা খাদানে আবদ্ধ শ্রমিকদের মধ্যে তিনজনের মৃতদেহ আবিষ্কার হয়েছে বলে আজ (মঙ্গলবার) সকালে এক খবর প্রকাশ হয়েছিল। জলে কিছু ভাসছে বলে উদ্ধার অভিযানকারী দলের ড্রোন ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল। তা দেখে তিন সেনা জওয়ান খাদানের নীচে গিয়ে মৃতদেহের বদলে উদ্ধার করেন তিনটি হলুদ রঙের হেলমেট।

ঘটনার সর্বশেষ আপডেট দিতে গিয়ে খনি-মন্ত্রী কৌশিক রাই বলেন, ‘স্পষ্ট বলা সম্ভব নয়, যতটুকু জানা গেছে, প্রায় ৩০০ ফুট গভীর খাদানে প্রায় ১০০ ফুট জল ঢুকে পড়েছে। তবে উদ্ধারকারী সংস্থাগুলি বহু জল নিষ্কাশন করেছে। এখনও কতটুকু রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। এক জিজ্ঞাসার জবাবে মন্রীতট বলেন, সঠিক কোনও হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১৫ জন শ্রমিক খাদানে আটকে রয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার টাস্ক ফোর্স’ (ইটিএফ) এবং অন্য এজেন্সির মূল্যায়ন অনুসারে খাদানের ভিতরে জলের স্তর বৃদ্ধির দরুন উদ্ধার অভিযান উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’

‘মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতির তদারকি করছেন। সিনিয়র অফিসাররা এখানে সশরীরে অবস্থান করে সম্মিলিতভাবে কাজ করছেন। জেলা কমিশনার সীমান্তকুমার দাস, পুলিশ সুপার ময়ঙ্ক কুমার ঝা, রাজ্য পুলিশের স্পেশাল ডিজিপি প্রমুখ গোটা উদ্ধার অভিযানের তদারকি করছেন। আবদ্ধ সবাইকে উদ্ধার করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে,’ আশ্বস্ত করেছেন মন্ত্রী কৌশিক।

মন্ত্ৰী জানান, সংঘটিত ঘটনার সাথে সম্পর্কিত বিএনএস (ভারতীয় ন্যায় সংহিতা)-এর খনি ও খনিজ (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন (১৯৫৭)-এর ধারা ৩(৫)/১০৫ এবং ধারা ২১(১)-য় উমরাংসো থানায় ০২/২০২৫ নম্বরে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুনিশ নুনিসা নামের একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, খাদানটি অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল।

রাতেও উদ্ধার অভিযান চলবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী রাই জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং আসাম রাইফেলস খদান সাইটে সার্বক্ষণিক অপারেশনের জন্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করেছে।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গতকাল সোমবার সকাল প্রায় ৯.০০টা নাগাদ ডিমা হাসাও জেলার অন্তৰ্গত অসম-মেঘালয় আন্তঃরাজ্য সীমান্তবর্তী উমরাংসো থানা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত ৩ কিলো এলাকায় প্রায় ৩০০ ফুট গভীর ‘১৯ নম্বর আসাম কয়লা কোয়ারি’ (কয়লা খাদান)-তে আচমকা বাইরে থেকে হড়কা বানের জল হু হু করে দ্রুতগতিতে ঢুকে পড়লে কর্মরত ১৫ জন (মতান্তরে ২০ জন) শ্রমিক আটকে পড়েছেন।

হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস




 

 rajesh pande