

হাফলং (অসম), ২৫ অক্টোবর (হি.স.) : মানুষকে কীভাবে ভালোবাসতে হয় তা সবাইকে শিখিয়ে গেছেন অতি জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী জুবিন গার্গ, বলেছেন কলকাতার কেকে লাইভ দ্য ফর এভার অ্যাভেঞ্জারের সদস্য মনীশা মজুমদার।
ডিমা হাসাও জেলার সদর শহর হাফলং থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরবর্তী খোবাক গ্রামে লুংজুবেল উৎসবে অংশগ্ৰহণ করে মনীশা মজুমদার বলেন, সংগীতের মাধ্যমে জুবিন গার্গ আমাদের মধ্যে চিরদিন বেঁচে থাকবেন। লুংজুবেল উৎসবে জুবিন গার্গের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে ‘মায়াবিনী...’ সংগীত পরিবেশন করে মনীষা বলেন, ‘আমি অসমীয়া ভাষা বলতে পারি না, কোনও অসমীয়া গানও গাইনি। তবে মায়াবিনী গানটি পরিবেশন করে জুবিনদাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।’
‘মায়াবিনী...’ গানটি গেয়ে মনীশা আবেগিক হয়ে বলেন, ‘আমি যখন গানটি গেয়েছি তখন আমার মনে হয়েছে জুবিন গার্গ আমাদের মধ্যে রয়েছেন এবং আমাদের শুনছেন। আজ তাঁর জন্য মায়াবিনী রাতির বুকত গানটি গেয়েছি।’ তিনি বলেন, সংগীতের মধ্যেই আমরা জুবিন দাকে দেখতে পাই এবং সংগীতের মধ্যেই জুবিন গার্গ আমাদের সবার মধ্যে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
জুবিন গার্গের অস্বাভাবিক মৃত্যু-ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়ের দাবি জানিয়েছেন মনীশা মজুমদার। লুংজুবেল উৎসবে যোগ দিতে প্রথমবার ডিমা হাসাও জেলায় এসে এখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আর পাহাড়ি জেলার মানুষের অতিথেয়তা দেখে মুগ্ধ হয়ে ওঠেন কলকাতার সংগীতশিল্পী মনীশা মজুমদার।
এদিকে লুংজুবেল উৎসব সম্পর্কে বলতে গিয়ে বেইতে কালচারাল অর্গানাইজেশনের সভাপতি রামসিয়ামা নামলাই বলেন, ২০১৫ সালে প্ৰথমবার স্থানীয়ভাবে বেইতে কালচারাল অৰ্গানাইজেশন লুংজুবেল উৎসবের আয়োজন করেছিল। কিন্তু সাত বছর পর ২০২৩ সালে উত্তর কাছাড় পাৰ্বত্য স্বশাসিত পরিষদের সহযোগিতা এবং বেইতে কালচারাল অৰ্গানাইজেশনের উদ্যোগে লুংজুবেল উৎসব পুনরায় শুরু হয়েছে।
এ বছর বেইতে কালচারাল অৰ্গানাইজেশন, ডিমা হাসাও জেলা পৰ্যটন এবং প্ৰত্নতাত্বিক বিভাগের সহযোগিতায় লুংজুবেল উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে, জানিয়েছেন খোবাক।
বেইতে কালচারাল অর্গানাইজেশনের সভাপতি রামসিয়ামা নামলাই জানান, খোবাক গ্রাম ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে উল্লেখযোগ্য। ওই গ্ৰাম স্টোন জারের জন্য পরিচিত, যে স্টোন জারগুলিকে লুংজুবেল স্টোন জার বলা হয়। এই উৎসবের মাধ্যমে স্থানীয় বেইতে সম্প্ৰদায় নিজের প্ৰাচীন পরম্পরা এবং কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে তুলে ধরার পাশাপাশি সংরক্ষণ করার প্ৰচেষ্টা অব্যাহত রেখে।
রামসিয়ামা নামলাই বলেন, লুংজুবেল হচ্ছে এখন প্ৰত্নতাত্ত্বিক স্থান এবং লুংজুবেল স্টোন জারের স্থান। তাছাড়া লুংমাইচাং স্টোন জার এবং অন্যান্য স্টোন জার রয়েছে এবং এ ক্ষেত্ৰে এই স্টোন জারগুলি সংরক্ষণের প্ৰয়োজনীয়তার বিষয়ে সজাগতা সৃষ্টির জন্য এই লুংজুবেল উৎসব অতি গুরুত্বপূৰ্ণ। অন্যদিকে, অসম সরকার পৰ্যটন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই স্থানের উন্নীতকরণের পদক্ষেপ গ্ৰহণ করেছে। পৰ্যটন বিভাগের সহযোগিতায় ডিমা হাসাও জেলার সুন্দর, পাহাড়ি অঞ্চলে পৰ্যটকদের আকৰ্ষণ করতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই লুংজুবেল উৎসবে ঐতিহাসিক লুংজুবেল স্টোন জারের সঙ্গে জড়িত আচার অনুষ্ঠান আদি অনুষ্ঠিত করা হয় বলে জানিয়েছেন বেইতে কালচারেল অৰ্গেনাইজেশনের সভাপতি রেমসিয়ামে নামলাই।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্ৰবার খোবাক গ্রামে লুংজুবেল উৎসবের আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করেছেন উত্তর কাছাড় পাৰ্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কাৰ্যবাহী সদস্য দেবোলাল গাৰ্লোসা।
হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব