(লিড) বন্দে মাতরম শুধুমাত্র একটি শব্দ নয়, এটি ভারতের আত্মা ও সংকল্পের স্বর: প্রধানমন্ত্রী
নয়াদিল্লি, ৭ নভেম্বর (হি.স.): শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে বন্দে মাতরম শুধুমাত্র একটি শব্দ নয়, এটি একটি মন্ত্র, একটি শক্তি, একটি স্বপ্ন এবং একটি সংকল্প। এই গানটি ভারত মাতার প্রতি ভক্তি এবং নিষ্ঠার প্রতীক। যা আমাদের অতীতের সঙ্গে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী


নয়াদিল্লি, ৭ নভেম্বর (হি.স.): শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে বন্দে মাতরম শুধুমাত্র একটি শব্দ নয়, এটি একটি মন্ত্র, একটি শক্তি, একটি স্বপ্ন এবং একটি সংকল্প। এই গানটি ভারত মাতার প্রতি ভক্তি এবং নিষ্ঠার প্রতীক। যা আমাদের অতীতের সঙ্গে সংযুক্ত করে, বর্তমানের প্রতি আস্থা জাগিয়ে তোলে এবং ভবিষ্যতের জন্য সাহস জোগায়।

প্রধানমন্ত্রী মোদী শুক্রবার জাতীয় গীত বন্দে মাতরমের ১৫০ তম বার্ষিকী উপলক্ষে দিল্লিতে বর্ষব্যাপী উদযাপনের সূচনা করেছেন। তিনি বন্দে মাতরমের উপর একটি বিশেষ স্মারক মুদ্রা এবং ডাকটিকিটও প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেন, এ গানের আবেগ ভারতমাতাকে ঘিরে। এই গান ভারতের মধ্যে বিশ্বাস জোগায়, আমাদের লক্ষ্য যতই কঠিন হোক না কেন, তা ভারতবাসীর পক্ষে অসাধ্য কিছু নয়। এক সুরে যখন গোটা দেশ এই গান গেয়ে ওঠে, তখন ভারতের একতার ছবি ফুটে ওঠে। একের পর এক প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করেছে বন্দে মাতরম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই গানটি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য অনুপ্রেরণা এবং আজও এটি স্বাধীনতা রক্ষার সংকল্পের প্রতীক। বঙ্কিম বাবু ভারত মাতাকে জ্ঞানের দেবী সরস্বতী, সমৃদ্ধির দেবী লক্ষ্মী এবং শক্তির দেবী দুর্গা হিসেবে চিত্রিত করেছেন। এই অনুভূতি ভারতকে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা এবং আত্মনির্ভরতার ক্ষেত্রে অগ্রণী করে তুলছে। যখন ভারত চাঁদে পা রেখেছিল, যখন আমাদের মেয়েরা যুদ্ধবিমান চালাতে শুরু করেছিল, অথবা যখন আমাদের মেয়েরা বিজ্ঞান ও খেলাধুলায় নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে শুরু করেছিল, তখন প্রতিটি ভারতীয়ের হৃদয় থেকে একটিই আওয়াজ বেরিয়ে এসেছিল: ভারত মাতা কি জয়, বন্দে মাতরম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্দে মাতরম কেবল স্বাধীনতার গান নয় বরং ভারতের আত্মার প্রকাশ। এই উপলক্ষে, তিনি বন্দে মাতরম ধ্বনি উচ্চারণ করে জীবন উৎসর্গকারী সকল স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিনয় কুমার সাক্সেনা এবং মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা–সহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৩৭ সালে বন্দে মাতরমের আত্মার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বন্দে মাতরমকে ভেঙে টুকরো করা হয়েছিল। বন্দে মাতরমের এই বিভাজনেই দেশের বিভাজনের বীজ বপন করা হয়েছিল। রাষ্ট্র নির্মাণের এই মহামন্ত্রের সঙ্গে এই অন্যায় কেন হয়েছিল, তা আজকের প্রজন্মের জানা প্রয়োজন। দেশের জন্য সেটাই আজও সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।' উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ‘বন্দে মাতরম্‌’ – এর পূর্ণাঙ্গ সংস্করণ সমবেতভাবে গাওয়া হয়। সমাজের সর্বস্তরের নাগরিকরা এতে অংশগ্রহণ করবেন।

প্রসঙ্গত, ১৮৭৫ সালের ৭ নভেম্বর অক্ষয় নবমীর পুণ্যতিথিতে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই গান লিখেছিলেন বলে মনে করা হয়। তাঁর আনন্দমঠ উপন্যাস যখন বঙ্গদর্শন পত্রিকায় পর্বে পর্বে প্রকাশিত হচ্ছিল, তখন তাতে এই গানটি প্রথম দেখা যায়। পরবর্তীকালে ১৮৮২ সালে আনন্দমঠ উপন্যাসটি বই হিসেবে প্রকাশিত হয়। সেই সময়ে ভারত সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চলছিল এবং জাতীয় পরিচয় ও ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের চেতনা ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছিল। মাতৃভূমিকে শক্তি, সমৃদ্ধি ও দেবত্বের মূর্ত প্রতীক হিসেবে অভিবাদন জানিয়ে এই গানটি ভারতের ঐক্য ও আত্মসম্মানবোধের জাগ্রত চেতনাকে কাব্যিক রূপ দেয়। অচিরেই এটি স্বদেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক হয়ে ওঠে।

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ




 

 rajesh pande