
নয়াদিল্লি, ১১ ডিসেম্বর (হি.স.): ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দেওয়া কিংবদন্তি সেতার বাদক ও ভারতরত্ন পণ্ডিত রবিশঙ্করের মৃত্যুবার্ষিকীতে বৃহস্পতিবার উপরাষ্ট্রপতি সি.পি. রাধাকৃষ্ণন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্য-সহ বহু রাজনৈতিক নেতা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সামাজিক মাধ্যমে তাঁরা জানান, রবিশঙ্কর শুধু ভারতীয় শিল্পকে বৈশ্বিক পরিচিতিই দেয়নি, বরং দেশের সাংস্কৃতিক মর্যাদাকেও তুলে ধরেছে।
বৃহস্পতিবার এক্সবার্তায় উপরাষ্ট্রপতি সি.পি. রাধাকৃষ্ণণ বলেন, পণ্ডিত রবিশঙ্কর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে বৈশ্বিক স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন। তিনি ছিলেন ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অসাধারণ দূত। তাঁর শিল্পকর্ম আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহর লাল বলেন, রবিশঙ্করের অবদান অনন্য। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতকে বিশ্বের কাছে তাঁর পৌঁছে দেওয়ার কাজ ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে।
কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান তাঁকে ‘সংগীতের অনন্য সাধক’ বলে বর্ণনা করেন এবং বলেন, বিশ্বমঞ্চে ভারতীয় সংগীতের পরিচিতি গড়ে তোলায় তাঁর ভূমিকা ঐতিহাসিক।
উত্তর প্রদেশের উপমুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক বলেন, পণ্ডিত রবিশঙ্করের শিল্প আজও ভারতীয় সংস্কৃতির গৌরব। বিজেপি সাংসদ কমলজিত সেহরাওয়াতও তাঁকে প্রণাম জানিয়ে বলেন, ভারতীয় সংগীতকে বিশ্বজোড়া পরিচিতি দেওয়ায় তাঁর অবদান কখনও ভোলা যাবে না।
উল্লেখ্য, পণ্ডিত রবিশঙ্কর ছিলেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেতার বাদক। তাঁর জন্ম ৭ এপ্রিল, ১৯২০, বেনারস, উত্তর প্রদেশ। মৃত্যু ১১ ডিসেম্বর, ২০১২, স্যান ডিয়েগো, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের মাইহার ঘরানার স্রষ্টা আচার্য আলাউদ্দীন খানের শিষ্য রবিশঙ্কর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ঐতিহ্য এবং ভারতীয় সঙ্গীতকে ১৯৬০-এর দশকে পাশ্চাত্য বিশ্বের কাছে প্রথম তুলে ধরেন। ১৯৬০-এর দশকে বিটলস শিল্পী জর্জ হ্যারিসন তাঁর শিষ্য হলে পশ্চিমী দুনিয়ায় সেতারের সুর আরও জনপ্রিয়তা পায়। সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালি’, ‘অপরাজিত’, ‘অপুর সংসার’-এর সংগীতও তাঁর সৃষ্টি। তাঁর সাঙ্গীতিক কর্মজীবনের পরিব্যাপ্তি ছয় দশক জুড়ে। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুকালে রবিশংকর দীর্ঘতম আন্তর্জাতিক কর্মজীবনের জন্য গিনেস রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন। তাঁকে বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে প্রভাবশালী সঙ্গীতজ্ঞদের একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। চারটি গ্র্যামি, একটি অস্কার মনোনয়ন ও বহু আন্তর্জাতিক সম্মানপ্রাপ্ত পণ্ডিত রবিশঙ্করকে ভারতরত্ন প্রদান করা হয়।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌমি বৈদ্য