

গুয়াহাটি, ২০ ডিসেম্বর (হি.স.) : অসমে মিজোরামের সাংহাই-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেসের ধাক্কায় সাতটি হাতির মর্মান্তিক মৃত্যুর পাশপাশি একটি শাবক গুরুতরভাবে আহত। এ ঘটনায় পাঁচটি যাত্রীবাহী বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। তবে সৌভাগ্যবশত কোনও যাত্রী আহত হননি বলে জানিয়েছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর) কর্তৃপক্ষ। এদিকে রেল বিভাগ তিনটি হেল্পলাইন নম্বর যথাক্রমে ০৩৬১-২৭৩১৬২১ / ২৭৩১৬২২ / ২৭৩১৬২৩ জারি করেছে।
দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে আজ শনিবার ভোররাত ২:২৭ মিনিট নাগাদ গুয়াহাটি থেকে প্ৰায় ১২৬ কিলোমিটার দূরবৰ্তী এনএফআর-এর লামডিং ডিভিশনের অধীন নগাঁও জেলার অন্তর্গত কামপুর-যমুনামুখ রেলস্টেশনের মধ্যবর্তী চাংজুরাই এলাকায়। ভয়ংকর দুর্ঘটনার ফলে লাইনচ্যুত হয়েছে ট্রেনের ইঞ্জিন সহ পাঁচটি যাত্রীবাহী বগি। এদিকে এ ঘটনার ফলে ওই রুটে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অংশে রেল পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুনো হাতির পালটিতে প্রায় আটটি হাতি ছিল। তাদের মধ্যে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে সাতটি হাতির।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে রেলওয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিক এবং বিভাগীয় আপৎকালীন পরিষেবার বিশাল দল অকুস্থলে গিয়ে উদ্ধারকার্যে নেমে পড়েছে। চলছে রেলপথকে সচল করার কাজ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন পশু চিকিৎসক সহ বন বিভাগের আধিকারিক-কৰ্মচারীরাও। তাঁরা বন্যপ্রাণীর ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করার পাশাপাশি আহত শাবকটিকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
রেল সূত্র জানিয়েছে, একাধিক হাতির মৃতদেহ, ক্ষতিগ্রস্ত কোচ এবং ধ্বংসাবশেষ দীর্ঘ সময় ধরে লাইনের ওপর পড়ে থাকায় আপার আসাম এবং উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন গন্তব্যে ট্রেন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
রেল আধিকারিকরা জানান, দুৰ্ঘটনাগ্ৰস্ত রাজধানী এক্সপ্রেসের সব যাত্রীকে গুয়াহাটি নিয়ে আসতে একটি বিশেষ ট্রেন পাঠানো হয়েছে। আজ সকাল ৬:১১ মিনিটে যাত্রীদের নিয়ে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে বিশেষ ট্রেন। গুয়াহাটিতে পৌঁছনোর পর সব যাত্রীদের উপযুক্ত আসন দিতে অতিরিক্ত কোচ সংযুক্ত করা হবে। তার পর রাজধানী এক্সপ্রেস তার পরবর্তী যাত্রা পুনরায় শুরু করবে, জানান রেল দফতরের আধিকারিকরা।
রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, দুর্ঘটনাটি এমন এক জায়গায় ঘটেছে যা সরকারিভাবে হাতির করিডোর হিসেবে চিহ্নিত নয়। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, লাইনে হাতির পাল দেখতে পেয়ে লোকো পাইলট জরুরি ব্রেক প্রয়োগ করেন। কিন্তু হাতিগুলি ট্রেনের দিকেই এগিয়ে আসায় সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে।
প্ৰসঙ্গত, খাদ্যের সন্ধানে রাত হলেই বনাঞ্চল ছেড়ে বিভিন্ন জনপদে নেমে আসে পালে পালে বুনো হাতি৷ কয়েক বছর আগে কামপুর-পটিয়াপাম এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল পাঁচটিটে বুনো হাতির৷
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস