
কলকাতা, ২৭ ডিসেম্বর (হি.স.): বহিরাগতদের হামলায় ভেস্তে গেল বাংলাদেশের রক তারকা জেমস ও তাঁর ব্যান্ডের অনুষ্ঠান। তারপরেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানালেন সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন| সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে একাধিক পোস্ট লিখেছেন তিনি|
তিনি একটি পোস্টে লেখেন, ফরিদপুর জিলা স্কুলে জেমসের প্রোগ্রাম পণ্ড হলো। জেমসকে গান গাইতে দেবে না তৌহিদী জনতা। দেশে ছায়ানট থাকবে না, উদীচী থাকবে না, বাউল থাকবে না, নগর বাউল থাকবে না, তবলা হারমোনিয়াম গিটার থাকবে না। সুর থাকবে, সে শুধু আজানের সুর। আর কোনও সুর নয়। জিহাদিদের সাফ কথা। মানলে ভাল। না মানলে মুণ্ডু যাবে।
আরও একটি পোস্টে তিনি লেখেন, সংস্কৃতি ভবন ছায়ানট পুড়ে ছাই। গান, নাটক, নৃত্য, আবৃত্তি এবং লোকজ সংস্কৃতির প্রসারের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল চেতনা বিকাশের জন্য গড়ে ওঠা সংগঠন উদীচী পুড়ে ছাই। আজ বিখ্যাত গায়ক জেমসকে অনুষ্ঠানে গান গাইতে দেয়নি জিহাদিরা। কিছুদিন আগে ঢাকায় এসেছিলেন সিরাজ আলী খান। তিনি বিশ্বখ্যাত সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ছেলে আলী আকবর খানের নাতি। সিরাজ আলী খানও মাইহার ঘরানার সংগীতের একজন খ্যাতিমান শিল্পী। সিরাজ আলী খান ঢাকায় এসে অনুষ্ঠান না করেই ভারতে ফিরে গিয়েছেন। বলেছেন শিল্পী, সংগীত এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিরাপদ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে আর আসবেন না। দু'দিন আগে ওস্তাদ রশীদ খানের ছেলে আরমান খানও ঢাকার আমন্ত্রণ রক্ষা করেননি, তিনিও জানিয়ে দিয়েছেন সংগীতবিদ্বেষী জিহাদি অধ্যুষিত বাংলাদেশে তিনি পা রাখতে চান না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে ফরিদপুর জেলা বিদ্যালয়ের ১৮৫ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ওই অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তবে হামলার জেরে তা বাতিল হয়ে যায়। আহত বেশ কয়েক জন ছাত্রও। আয়োজকদের দাবি, বেশ কয়েক জন বহিরাগত অনুষ্ঠান দেখার জন্য বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়। তার পরেই তাঁরা ইট ছুড়তে শুরু করেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মঞ্চ দখলের চেষ্টার অভিযোগও তুলেছেন আয়োজকেরা।
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ