
দুর্গাপুর, ৩১ ডিসেম্বর (হি.স.): বছর শেষের দিনে উত্তপ্ত হয়ে উঠল শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের লাউদোহা এলাকা। বিজেপির এসআইআর সহায়তা ক্যাম্প পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে ঘিরে বুধবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর–ফরিদপুর (লাউদোহা) ব্লকে রাজনৈতিক উত্তেজনা ছড়ায়।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে নতুন বছরে বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর বিভিন্ন ব্লকে শুনানির কাজ চলছে। এই শুনানিতে সাধারণ ভোটারদের সহায়তার জন্য বিডিও অফিসগুলির বাইরে তৃণমূল ও বিজেপি—উভয় দলই সহায়তা ক্যাম্প খুলেছে। লাউদোহা ব্লক কার্যালয়ের বাইরেও দুই দলের পৃথক ক্যাম্প চালু ছিল।
বিজেপির অভিযোগ, মঙ্গলবার গভীর রাতে তাদের সহায়তা ক্যাম্পে আগুন লাগানো হয়। আগুনে সম্পূর্ণভাবে পুড়ে যায় ক্যাম্পটি। বিজেপির লাউদোহা মণ্ডল সভাপতি সপ্তর্ষি মণ্ডল বলেন, “বিডিও অফিসের পাশে রাস্তার ধারে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য আমরা এসআইআর সহায়তা ক্যাম্প করেছিলাম। মঙ্গলবার তৃণমূলের গোগলা অঞ্চল সভাপতি গৌতম ঘোষ, গোগলা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্যামল বাগদি ও তাঁদের অনুগামীরা আমাদের ক্যাম্পের কর্মীদের হুমকি দেন। পরে বুধবার সকালে এসে দেখি ক্যাম্পটি আগুনে ভস্মীভূত। এটি তৃণমূলের পরিকল্পিত কাজ। আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাই।”
উল্লেখ্য, এর আগেও লাউদোহা এলাকায় রাজনৈতিক সংঘর্ষের অভিযোগ উঠেছে। গত ১১ আগস্ট শুভেন্দু অধিকারীর ‘কন্যা সুরক্ষা যাত্রা’-র আগে দলীয় পতাকা টাঙানোকে কেন্দ্র করে বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে। সে ঘটনায় দুই বিজেপি কর্মী গুরুতর আহত হন বলে অভিযোগ ছিল।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “এটি একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। এসআইআর প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করেছিল তৃণমূল। ব্লক অফিসে দুর্নীতির নথি পোড়ানোর উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। আমরা নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। গোগলা অঞ্চল সভাপতি গৌতম ঘোষ বলেন, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। বিজেপির ক্যাম্প কার্যত ফাঁকা ছিল। শুনানিতে আসা ভোটাররা সহায়তার জন্য প্রতিদিন তৃণমূলের ক্যাম্পে ভিড় করছেন। প্রচারে ব্যর্থ হয়ে বিজেপি নিজেরাই ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে আমাদের দোষারোপ করছে।”
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা