কলকাতা, ৪ ফেব্রুয়ারি (হি.স.): পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকেই সিভি আনন্দ বোস রাজ্যের সমস্ত ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এসেছেন। রাজ্যে কোথাও, কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটলেই সেখানে তিনি নিজে ছুটে গিয়েছেন। এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি যে কোনও অশান্তি কড়া হাতে দমন করার বার্তা দিয়েছেন। বিশেষ সাক্ষাৎকারে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন হিন্দুস্থান সমাচার–এর প্রতিনিধি অশোক সেনগুপ্ত।
১) প্রঃ—পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
উঃ— হ্যাঁ, বিভিন্ন জায়গায় হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে চলেছে। অনেক জায়গায় অপ্রয়োজনে অশান্তি হয়েছে, বা হয়।
২) প্রঃ— আপনি কীরকম ভূমিকা নিয়েছেন?
উঃ— আমি আমার মতো করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করি। পারলে সেরকম ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলে যাই। হাসপাতালে, কখনও সংঘর্ষে নিহতের বাড়িতেও গিয়েছি। কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি বেশি জটিল হয়।
৩) প্রঃ— সেরকম ক্ষেত্রে আপনি কী ব্যবস্থা নেন?
উঃ— ‘মোবাইল রাজভবন’ নামে টহলদারি নজরদার যায় উপদ্রুত এলাকায়। সকাল ৬টাতেও গাড়ি বেরিয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেছে।
৪) প্রঃ—এতে লাভ কতটা হয়েছে?
উঃ— অনেক অভিযোগ পেয়েছি। সেসব স্থানীয় থানাকে জানিয়েছি। নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গ থেকে একবার এক অসহায় পরিবার রাজভবনে সাহায্য চায়। তারা প্রাণহানির আশঙ্কা করছিল। আমি পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টা জানাই। পুলিশ সুরক্ষার ব্যবস্থা করে। পরে বাচ্চাকে নিয়ে ওই পরিবারের দম্পতি রাজভবনে এসে আমাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গিয়েছে।
৫) প্রঃ—পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে রাজ্য। মনোনয়ন পর্বে রক্ত ঝরে। এরকম অবস্থায় ২০২৩-এর ১৭ জুন রাজভবনে পিস রুম চালু হয়। কোন পরিস্থিতিতে ওরকম অভূতপূর্ব ব্যবস্থা করেন?
উঃ— পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে বাংলায় বিভিন্ন অশান্তি ও হিংসার ঘটনার অভিযোগ প্রতিদিনই উঠছিল। নাগরিকদের সাহায্য করতেই 'পিস রুম' খোলে রাজভবন।
মূলত, ভোট সংক্রান্ত বিষয়ে সাধারণ মানুষের বিভিন্ন অভিযোগ জানতে এবং সেগুলির বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করতেই রাজভবনে খোলা হয় ওই বিভাগ। যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজভবনের তরফে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে সমস্যাগুলি পাঠানো হয়।
৬) প্রঃ— আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে রাজ্যের কাছে কতটা সহযোগিতা পেয়েছেন?
উঃ— (সামান্য ভেবে) দেখুন, কোনও ঘটনার তদন্তে একটু সময় লাগে। রাজ্যপাল হিসাবে শপথ নেওয়ার আগে দুটো অঙ্গীকার করেছিলাম— ক) সংবিধানকে রক্ষা করব এবং খ) সাধারণ মানুষকে ভাল রাখার চেষ্টা করব। অঙ্গীকার রক্ষার সর্বতোভাবে চেষ্টা করে চলেছি।
৭) প্রঃ— দক্ষিণ কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজে সরস্বতী পুজো করাতে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করতে হয়েছে। এটা কীভাবে দেখছেন?
উঃ— দেখুন, বিষয়টা হাই কোর্ট অবধি গড়িয়েছিল। যা হয়েছে, বিচারপতির নির্দেশে হয়েছে। এ নিয়ে কিছু বলা সমীচিন হবে না।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত