গুয়াহাটি, ৬ এপ্রিল (হি.স.) : ‘যতদিন সূর্য ও চন্দ্র থাকবে, ততদিন ভারতের সেবা করবে বিজেপি। দলকে দুর্বল করার অর্থ, ভারতের বিশ্বনেতার পদ দখলের পথে অগণিত বাধা তৈরি করা।’ জোরের সঙ্গে বলেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
আজ রবিবার রামনবমীর দিন গুয়াহাটিতে বিজেপির ৪৬-তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে দলীয় কার্যকর্তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা কথাগুলি বলছিলেন। তিনি বলেন, বিজেপিকে দুর্বল করার অর্থ কোনও ব্যক্তিকে দুর্বল করা নয়। এর অর্থ, একটি আদর্শ এবং জাতীয় গর্বকে দুর্বল করা। বিজেপিকে দুর্বল করার অর্থ, ভারতকে বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যাওয়ার পথে অসংখ্য বাধা তৈরি করা।
এদিন সকালে বিজেপির অসম প্রদেশ সভাপতি দিলীপ শইকিয়াকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা গুয়াহাটিতে প্রদেশ সদর দফতরে দলের বরিষ্ঠ নেতা এবং সাধারণ সদস্যদের উপস্থিতিতে দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা ভবিষ্যতে ভারতকে বিশ্বনেতা হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার গ্রহণের জন্য দলের প্রত্যেক কার্যকর্তার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘যতদিন সূর্য ও চন্দ্র থাকবে, বিজেপি ততদিন জাতির সেবা করবে, আমিও তা-ই চাই। আমি সকলের কাছে জাতির সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করার আবেদন জানিচ্ছি।’
ড. শর্মা বলেন, ‘আগামী দিনে অগ্রগতি ও শক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় কেউ কেউ দলকে দুর্বল ও বদনাম করার চেষ্টা করবে। সোশাল মিডিয়া বিজেপিকে বদনাম এবং দুর্বল করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়ও শক্তিশালী হতে হবে যাতে আমরা জনগণের কাছে ইতিবাচক বিষয়গুলি পৌঁছে দিতে পারি।’
মুখ্যমন্ত্ৰী জোরের সঙ্গে বলেন, ‘রাম মন্দির নির্মাণ কেবল একটি সহজ মন্দির নির্মাণ প্রক্রিয়া নয়, বরং ৫০০ বছরের দাসত্ব থেকে নিজেদের মুক্ত করার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ।’ তিনি আরও বলেন, ‘ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার চেয়ে সবার আগে জাতি এবং জাতির স্বার্থের চেয়ে কিছুই অগ্রাধিকার পায় না।’
হিমন্তবিশ্ব বলেন, ‘বিজেপি যদি না থাকত, তা-হলে ওয়াকফ বিলের মতো একটি যুগান্তকারী আইন পাস হতো না। একইভাবে, ৩৭০ ধারা বাতিল হতো না বা বিজেপি না থাকলে সংখ্যালঘু মহিলারা তিন তালাকের বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার পেতেন না। এছাড়া বিজেপি ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলে উন্নয়নও হতো না।’
ড. শর্মা বলেন, ‘বিজেপি অসমের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক ছাপ রেখে যেতে সক্ষম হয়েছে। তাই দল প্রতিটি স্বশাসিত পরিষদ, পুর পরিষদ এবং পঞ্চায়েতে শাসন করছে।’ ‘অসমবাসীকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে বিজেপি। এতে রাজ্যবাসীকে গর্বান্বিত করছে,’ বলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাষ্ট্রবাদের জন্য জীবন উৎসর্গকারী অগণিত কার্যকর্তাদের প্রতি আমি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে, বিজেপি ভারতের প্রতিটি বিভাগের আকাঙ্ক্ষা পূরণ এবং ভারতের গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যম হয়ে উঠেছে।’
ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘মোট সদস্য সংখ্যা থেকে বিজেপি চিনের কমিউনিস্ট পার্টির চেয়েও বড় হয়েছে।’ বলেন, ‘পরিবার-কেন্দ্রিক রাজনীতি এখনও আমাদের দলে প্রবেশ করেনি। এটি একটি কার্যকর্তা-নেতৃত্বাধীন দল এবং অদূর ভবিষ্যতেও তাই থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘জওহরলাল নেহরু এবং ইন্দিরা গান্ধী যেভাবে কংগ্রেসকে একটি পরিবার-পরিচালিত দলে রূপান্তরিত করেছেন, বিজেপি কখনও তা করবে না, কারণ এটা একটি ভিন্ন দল।’
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস