গোসাবা , ৯ মে (হি.স.) : শুক্রবার রবীন্দ্র জয়ন্তী পালনকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মনোমালিন্য ঘটে গোসাবায়। একদিকে রবীন্দ্র স্মৃতি রক্ষা কমিটির তরফে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও কবিগুরুর জন্মদিন পালিত হয় গোসাবার বেকন বাংলো চত্বরে। অন্যদিকে এবার গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে এদিন পালিত হয় কবিগুরুর জন্মদিন।
রবীন্দ্র স্মৃতি রক্ষা কমিটির অভিযোগ, গোসাবার বেকন বাংলো প্রাঙ্গণে রবীন্দ্র কবি গুরুর মূর্তির পাদদেশে তাঁদেরকে অনুষ্ঠান করতে বাধা দেওয়া হয় ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে। প্রতি বছর এই নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা রবীন্দ্র মূর্তির পাদদেশে এই বিশেষ দিন উদযাপন করেন এবং কবিগুরুর মূর্তিতে মালা দেন। কিন্তু এবার তাঁদেরকে এ কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। বেকন বাংলো প্রাঙ্গণের মধ্যেও তাঁদেরকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁরা জোর করে ঢোকেন ও কবিগুরুর জন্মদিন পালন করেন।
এই কমিটির সভাপতি অনাথ কুমার মাইতি ও সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “ এই গোসাবার মাটি কবিগুরুর পদধূলি ধন্য। বেকন বাংলোতে কবি ১৯৩২ সালের ২৯ ও ৩০ শে ডিসেম্বর রাত্রি যাপন করেছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে এই বাংলোর প্রাঙ্গণেই আমরা রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করে আসছি। প্রাক্তন সাংসদ তরুন মণ্ডল তাঁর সময়কালে সাংসদ তহবিলের অর্থে এখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ণ মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। সেই থেকেই আমরা এই মূর্তির পাদদেশে কবির জন্মদিন পালন করি। কিন্তু আজ আমাদের সেখানে দিনটি উদযাপন করতে দেওয়া হয়নি।” বাধ্য হয়েই কবিগুরুর একটি ছবিতে তাঁরা মাল্যদান করেন ও ছোট্ট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গোসাবার বিডিও বিশ্বরূপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, “ এটা ওনারা ঠিক বলছেন না। এবার যেহেতু দিনটি পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে উদযাপন করার বিষয়টি ঠিক হয়েছিল, তাই ওনাদেরকেও পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে এক সঙ্গে দিনটি উদযাপনের কথা বলা হয়। কিন্তু ওনারা রাজি হন নি। ওনারা এদিন সকালে নিজেদের মত করে অনুষ্ঠান করেছেন। কেউ তাঁদেরকে বাধা দেয় নি।”
তবে এদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোসাবাবাসী যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। গোসাবা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক পঙ্কজ মণ্ডল বলেন, “ আজ যেন গোসাবায় রবি ঠাকুর ভাগ হয়ে গেলেন। এত বছর ধরে রবীন্দ্র স্মৃতিরক্ষা কমিটি এই অনুষ্ঠান করে আসছে। কবিগুরুর মূর্তির পাদদেশে তাঁদের অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হল না। এটা গোসাবার সাধারণ মানুষের মনে আঘাত হেনেছে। অনেক ছাত্রছাত্রীরাও ছিল সেই সময়, তাঁদেরকে আমরা কি শিক্ষা দিলাম!”
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / পার্সতি সাহা