কলকাতা, ৯ মে (হি.স.): তসলিমা নাসরিনকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এবং শর্তাধীনে ভিসা দেওয়া হয়েছে। দেশের সর্বত্র তাঁকে যাওয়ার অধিকার দিয়েছে কেন্দ্র। বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যকে লিখিতভাবে এটা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী কিরিটী বর্ধন সিং।
শুক্রবার ওই চিঠি শেয়ার করা হয়েছে বিজেপি-র মিডিয়া হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। গত ১৭ মার্চ তসলিমাকে পশ্চিমবঙ্গে ফেরাতে চেয়ে বক্তব্য রাখেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। ওই তারিখের শমীকবাবুর দাবির উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। সেটির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে সংসদ বিষয়ক অধিকর্তা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বিভাগীয় আধিকারিককে।
শমীকবাবু ১৭ই বলেছিলেন, 'পরিস্থিতির জেরে বাধ্য হয়ে তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশ ত্যাগ করেছিলেন। তিনি কলকাতায় আসেন। আর সেই সময় তৎকালীন এক কংগ্রেস নেতা তাঁর বিরোধিতা করেছিলেন। সেই সময় কংগ্রেস তাঁকে (সেই নেতাকে) বহিষ্কার করে। এরপর তৃণমূল তাঁকে নিয়ে নেয়।…এরপর পরিস্থিতির জেরে তসলিমা কলকাতা ছাড়তে বাধ্য হন।'
এরপর সেদিনই ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তসলিমা। সেখানে তিনি লেখেন,' রাজ্যসভার সাংসদ কমিউনিস্ট পার্টির গুরুদাস দাশগুপ্ত ২০০৭ সালে আমাকে নিয়ে প্রথম কথা বলেছিলেন ভারতের সংসদে। আমি তখন সবে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার দ্বারা পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিতাড়িত। বাংলার টানে, প্রাণের টানে যে শহরে বসবাস শুরু করেছিলাম, সেই শহর থেকে কখনও যে বিতাড়িত হবে হবে, কল্পনাও করিনি। শ্রদ্ধেয় গুরুদাস দাশগুপ্ত প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি দাবি জানিয়েছিলেন আমাকে যেন পশ্চিমবঙ্গে ফিরতে দেওয়া হয়।
তারপর দীর্ঘ বছর কোনও রাজনীতিক আমার কলকাতায় ফেরা নিয়ে কোনও কথা বলেননি। মাঝখানে একটি টিভি চ্যানেল থেকে সম্প্রচার হতে যাচ্ছিল ‘দুঃসহবাস’ নামে আমার লেখা যে মেগাসিরিয়ালটি, সেটির সম্প্রচার বর্তমান সরকার বন্ধ করে দেয়।
আজ, ১৮ বছর পর রাজ্যসভার সাংসদ ভারতীয় জনতা পার্টির শমীক ভট্টাচার্য আমাকে কলকাতায় ফেরানোর দাবি জানালেন সংসদে। জানিনা, কলকাতায় শেষ পর্যন্ত আমার ফেরা হবে কি না, তবে তিনি যে আমার কথা মনে করেছেন, মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর অপরাধে নিজের জন্মভূমি থেকে নির্বাসিত আমি, বাংলায় লেখালেখি চালিয়ে যেতে হলে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পরিবেশে বাস করা আমার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ, তা তিনি উপলব্ধি করেছেন বলে তাঁকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।'
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত