নয়াদিল্লি, ২৫ জুন (হি.স.): প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জরুরি অবস্থা জারির ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বুধবার দেশের ইতিহাসের অন্যতম অন্ধকার অধ্যায়ে গণতন্ত্র রক্ষায় রুখে দাঁড়ানো অগণিত ভারতীয়দের প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। এই বিষয়ে জানিয়েছে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো।
তাদের তরফে জানানো হয়েছে, সাংবিধানিক মূল্যবোধের উপর আক্রমণের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ জুন দিনটি সংবিধান হত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিনটি এমন এক দিন, যখন মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছিল এবং অগণিত রাজনৈতিক নেতা, সমাজ কর্মী, ছাত্র ও সাধারণ নাগরিকদের জেল খাটতে হয়েছিল।
শ্রী মোদী সংবিধানের সিদ্ধান্তগুলিকে আরও মজবুত করতে তথা বিকশিত ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য একজোট হয়ে কাজ করার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জরুরি অবস্থার বিরোধিতায় আন্দোলন এক শিক্ষণীয় অনুভব। এই অভিজ্ঞতা আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে সুরক্ষিত রাখে।
শ্রী মোদী জরুরি অবস্থার সময়ের দিনগুলি যাঁরা স্মরণে রেখেছেন এবং সেই সময়ে যে পরিবারগুলি কষ্ট সহ্য করেছেন, তাঁদের সকলের প্রতি নিজেদের অভিজ্ঞতা সামাজিক মাধ্যমে ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানান। দেশের যুবসম্প্রদায় যেন ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত লজ্জাজনক সময়ের বিষয়ে জানতে পারেন, সেই আহ্বান জানান তিনি।
এক্স পোস্টে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের গণতান্ত্রিক ইতিহাসের সবচেয়ে কালো অধ্যায়গুলির মধ্যে একটি হ’ল আজকের দিনটি। জরুরি অবস্থা জারির ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। ভারতের জনগণ এই দিনটিকে সংবিধান হত্যা দিবস হিসেবে পালন করে। এই দিন ভারতীয় সংবিধানে যে নিহীত মূল্যবোধ রয়েছে, তা ধ্বংস করা হয়েছিল। মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয় এবং রাজনৈতিক নেতা, সমাজকর্মী, ছাত্র ও সাধারণ নাগরিকদের জেলবন্দি করা হয়। মনে হয় যেন, সেই সময়ে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস সরকার গণতন্ত্রকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল #SamvidhanHatyaDiwas”।
“কোনও ভারতীয়ই ভুলতে পারবেন না যে, কিভাবে আমাদের সংবিধানের ভাবনাকে খর্ব করা হয়, সংসদের আওয়াজ’কে রুদ্ধ করা হয় এবং আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালানো হয়। ৪২তম সংশোধন তাঁদের ছলচাতুরির এক বিশেষ উদাহরণ। গরীব ও দলিতদের, বিশেষ করে লক্ষ্য করা হয়েছিল। তাঁদের যথেচ্ছভাবে অপমান করা হয় #SamvidhanHatyaDiwas”।
“এই জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রত্যেক ব্যক্তিকে প্রণাম জানাই! সমগ্র ভারতের সব অঞ্চলের বিভিন্ন চিন্তাভাবনার জনগণ একে-অপরের সঙ্গে যুক্ত হয়ে লড়াই করেন : আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলেন, সেই ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে রক্ষা করার জন্য তাঁরা ঝাঁপিয়ে পড়েন। বাধ্য হয়ে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হয় এবং নির্বাচন করতে হয়। সেই নির্বাচনে তারা ব্যাপকভাবে পরাজিত হয় #SamvidhanHatyaDiwas”।
“আমাদের সংবিধানে যে সিদ্ধান্তগুলির উল্লেখ রয়েছে, তা মজবুত করতে এবং বিকশিত ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা উন্নয়নের নতুন উচ্চতায় পৌঁছবো এবং দরিদ্র ও বঞ্চিতদের স্বপ্ন পূরণ করব #SamvidhanHatyaDiwas”।
“যখন জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল, তখন আমি ছিলাম একজন তরুণ আরএসএস প্রচারক। জরুরি অবস্থা বিরোধী আন্দোলন আমার জন্য একটি শিক্ষণীয় অধ্যায় ছিল। সেই আন্দোলন আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে রক্ষা করার অঙ্গীকার জানায়। পাশাপাশি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকেও আমি অনেক কিছু শিখেছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ব্লু ক্র্যাফট্ ডিজিটাল ফাউন্ডেশন আমার সেই উপলব্ধির কিছু অংশ একটি বইয়ের আকারে সঙ্কলন করেছে। এর মুখবন্ধ লিখেছেন এইচ ডি দেবগৌড়াজি। তিনি নিজে জরুরি অবস্থা বিরোধী আন্দোলনের এক বিশেষ ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
“’দ্য এমার্জেন্সি ডায়েরিজ’ জরুরি অবস্থার সময়ে আমার যাত্রাপথের এক বর্ণনা। সেই সময়ের অনেক স্মৃতি এই বই মনে করিয়ে দেয়।
জরুরি অবস্থার সেই কালো দিনগুলির কথা যাঁরা মনে রেখেছেন অথবা যাঁদের পরিবার সেই সময়ে কষ্টভোগ করেছেন, তাঁদের সকলকে আমি সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানাই। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সালের লজ্জাজনক সময়ের বিষয়ে তরুণদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে #SamvidhanHatyaDiwas”
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ