হাফলং (অসম), ২৭ জুন (হি.স.) : সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে লামডিং-বদরপুর পাহাড় লাইনে রবিবার পরীক্ষামূলকভাবে চলতে পারে পণ্যবাহী ট্রেন, জানা গেছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে।
গত ২৩ জুন পাহাড় লাইনের জাটিঙ্গা লামপুর ও নিউহাফলং স্টেশনের মধ্যে ১৭৮/৭-৮ কিলোমিটারে ধস নেমে আসার জেরে গত পাঁচ দিন থেকে পাহাড় লাইনে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। জাটিঙ্গা-লামপুরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় দিন রাত এক করে রেল ট্র্যাক থেকে মাটি সরানোর কাজ করে চলছে রেল কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে পাহাড়ের ঢালু জায়গা থেকে প্রায় বিশ হাজার কিউবিক মাটি কেটে ফেলা হয়েছে। যদি কোনও প্রতিকূল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় তাহলে আগামী রবিবার (২৯ জুন) বিকালের মধ্যে রেল ট্র্যাক পরিস্কার করে পরীক্ষামূলকভাবে পণ্যবাহী ট্রেন চালানোর পূর্ণ সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এবং যাত্রীদের সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করার পর সোমবার থেকে পাহাড় লাইনে চালানো হতে পারে যাত্রীবাহী ট্রেন, জানা গেছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে। উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন বিকেলে পাহাড় লাইনের জাটিঙ্গা লামপুরের কাছে ১০৮/৭-৮ কিলোমিটারে পাহাড় থেকে মাটি পাথর কাদা জল নেমে আসায় উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ওই রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এদিকে ২৯ জুন পর্যন্ত উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল পাহাড় লাইনে ট্রেন চলাচল বাতিল করে দেয়। ২৭ ও ২৮ জুন গুয়াহাটি শিলচর ও শিলচর গুয়াহাটি এক্সপ্রেস ২৭ জুন রঙ্গিয়া শিলচর ও শিলচর রঙ্গিয়া এক্সপ্রেস ২৮ জুন গুয়াহাটি বদরপুর ও বদরপুর গুয়াহাটি ট্যুরিষ্ট স্পেশাল ট্রেন এবং ২৮ ও ২৯ জুন শিলচর নিউ তিনসুকিয়া ও নিউ তিনসুকিয়া শিলচর বরাক ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিল করেছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল।
তাছাড়া আংশিকভাবে রানি কমলাবতী আগরতলা এক্সপ্রেস গুয়াহাটি আগরতলার মধ্যে, শিয়ালদহ সাব্রুম কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস লামডিং সাব্রুমের মধ্যে, সাব্রুম শিয়ালদহ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস সাব্রুম লামডিংয়ের মধ্যে এবং আগরতলা বেঙ্গালুরু ক্যান্ট হামসফর এক্সপ্রেস আগরতলা কামাখ্যার মধ্যে আংশিক যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে গত পাঁচ দিন থেকে লামডিং-বদরপুর পাহাড় লাইনে ও লামডিং হাফলং শিলচর ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কে ধস নেমে রেলপথ ও সড়ক পথ বন্ধ হয়ে পড়ার জেরে লামডিং স্টেশনে বরাক উপত্যকা ও ত্রিপুরার রেল যাত্রীদের প্রচণ্ড দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়েছে। অনেক যাত্রী লামডিং থেকে জাটিঙ্গা এসে পায়ে হেঁটে দুর্গম পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে হারাঙ্গাজাও যাওয়ার পর নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হচ্ছেন।
তাছাড়া ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় পণ্যবাহী লরি আটকে পড়ায় চালকদের মধ্যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। তবে আটকে পড়া রেলযাত্রী ও জাতীয় সড়কে আটকে পড়া লরি চালকদের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ বা ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন খাওয়া-দাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করেনি বলে অভিযোগ।
এদিকে ডিমা হাসাও জেলায় ২৭ নম্বর জাতীয় সড়কে আটকে পড়া লরি চালক ও রেলযাত্রীদের হারাঙ্গাজাওয়ের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তথা উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের কার্যনির্বাহী সদস্য আমেন্দু হোজাই ব্যক্তিগতভাবে খাবারের ব্যবস্থা করছেন। গত দুদিন থেকে ডিটেকছড়ায় আটকে পড়া রেলযাত্রী ও ট্রাক চালকদের জন্য দিনে রাতে খাবারের ব্যবস্থা করছেন আমেন্দু।
হিন্দুস্থান সমাচার / বিশাখা দেব