শিমলা, ২৩ জুলাই (হি.স.): কিছুদিনের স্বস্তির পর ফের ধেয়ে আসছে প্রবল বৃষ্টি। আগামী ২৭ জুলাই থেকে ফের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করল বুধবার আবহাওয়া দফতর। আগামী ২৪ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের কিছু কিছু অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও ওই সময় কোনও সতর্কতা নেই। তবে ২৭ থেকে ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে ফের ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে কাংড়া, মাণ্ডি ও সিরমৌর জেলায় ২৭ জুলাই হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে। এবছর বর্ষা মরসুমে রাজ্যে গড়ের থেকে ১৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
বিগত ২৪ ঘণ্টায় হিমাচল প্রদেশে রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬০ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে মানালিতে। এছাড়া শিমলার স্যারাহান ও কাংড়ার ঘুমরূর অঞ্চলে ৪০ মিমি, কাংড়ার নগরোটা সুরিয়া, হামিরপুরের আঘর, কাংড়ার গুলের এবং বিলাসপুর সদর এলাকায় ৩০ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
প্রবল বৃষ্টি এবং ভূমিধসের ফলে রাজ্যের বিভিন্ন পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৩৪৪টি রাস্তা বন্ধ ছিল, যার মধ্যে একটি জাতীয় সড়কও রয়েছে। মাণ্ডি জেলার মাণ্ডি-কোটলি জাতীয় সড়ক বন্ধ রয়েছে, তবে সিরমৌরের পাঁওটা সাহিব-শিলাই সড়ক আবার চালু করা হয়েছে। শুধুমাত্র মাণ্ডি জেলাতেই ২৩২টি সড়ক অবরুদ্ধ হয়েছে, কুলুতে ৭১টি, লাহৌল-স্পিতিতে ১৫টি এবং কাংড়ায় ১১টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে।
হিমাচলে রাজ্যজুড়ে ১৬৯টি বিদ্যুৎ ট্রান্সফর্মার এবং ২৩০টি পানীয়জল প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। মাণ্ডিতে ৯৮, কুল্লুতে ৬৫, চাম্বায় ১০, শিমলায় ৫ এবং কাংড়ায় ৪টি ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে রয়েছে। পানীয়জল প্রকল্পগুলির মধ্যে চাম্বায় ৬০, কাংড়ায় ৫৯ এবং সিরমৌরে ৩৪টি প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এবারের বর্ষায় এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ১৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন ২২৮ জন এবং নিখোঁজ রয়েছেন ৩৪ জন। শুধুমাত্র মাণ্ডি জেলাতেই মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের, কাংড়ায় ২১, চাম্বায় ১৬, কুল্লুতে ১৫ এবং শিমলায় ১১ জনের। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৪০১টি বাড়ি, ২৮৭টি দোকান এবং ১০৬৬টি গবাদিপশুর শেড পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। আরও ৮২৯টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মাণ্ডি জেলায়, যেখানে ৯৫২টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার মধ্যে ৩৬৮টি একেবারে ধ্বংস হয়েছে।
এই বর্ষার মরসুমে রাজ্যে মোট ১৩৮২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির হিসাব মিলেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৬৫১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে সড়ক নির্মাণ বিভাগে এবং ৪৮৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে জল শক্তি বিভাগে।
এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২৬টি ভূমিধস, ৪২টি বন্যা এবং ২৪টি মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। শুধুমাত্র মাণ্ডি জেলাতেই ১৫টি মেঘভাঙা বৃষ্টি, ১১টি বন্যা এবং ৪টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌমি বৈদ্য