নয়াদিল্লি, ২৩ জুলাই (হি.স.): এই প্রথম মহিলা ও শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধের শাস্তি ন্যায় সংহিতার একটি অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এ মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধে যারা লিপ্ত হবেন তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সী কোনও মহিলাকে গণধর্ষণ করা হলে, অপরাধীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। বিবাহ, কর্মসংস্থান, পদোন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়ে অথবা পরিচয় গোপন করে কারওর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই বিষয়ে জানিয়েছে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)।
পিআইবি-র তরফে জানানো হয়েছে, মানব পাচারের মতো অপরাধের মোকাবিলা করার জন্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ২০২৩-এর ১৪৩ নম্বর ধারায় মানব পাচারে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। যদি কোনো শিশুকে পাচার করা হয়, তাহলে অপরাধীর কমপক্ষে ১০ বছর কারাদণ্ড হবে। এর সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং জরিমানাও হতে পারে। মানব পাচারের মাধ্যমে যদি কাউকে ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়, তাহলে সেটিও অপরাধযোগ্য। পাচার করা শিশু যৌন হয়রানির শিকার হলে ন্যায় সংহিতার ১৪৪-এর ১ ধারা অনুসারে দোষী ব্যক্তির সর্বনিম্ন ৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
পরিশিষ্ট
মহিলাদের সুরক্ষিত রাখার জন্য আইনী সংস্থান –
১২ বছর থেকে ১৬ বছর বয়সী কোনো কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হলে আগে অপরাধীদের জন্য আলাদা আলাদা শাস্তির বিধান ছিল। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় নাবালিকারা গণধর্ষণের শিকার হলে অপরাধীর শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
যে ব্যক্তি অপরাধের শিকার হয়েছেন, তাকে আরও সুরক্ষা দেওয়ার সংস্থান নতুন আইনে করা হয়েছে। ধর্ষণের মতো অপরাধের তদন্তের স্বচ্ছতা আনার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত মহিলার বয়ান পুলিশ অডিও-ভিডিও-র মাধ্যমে রেকর্ড করতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপরাধের শিকার মহিলাদের বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য মহিলা ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে সেই কাজ করাতে হবে। তবে, মহিলা ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে বয়ান রেকর্ড করার সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত মহিলার যাতে কোনো সমস্যা না হয় তা নিশ্চিত করতে একজন মহিলার উপস্থিতি বাধ্যতামূলক।
ধর্ষণের শিকার মহিলার মেডিকেল রিপোর্ট তদন্তকারী অফিসারের কাছে ডাক্তারকে ৭ দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। ১৫ বছরের কম অথবা ৬০ বছরের (আগে এই বয়সসীমা ছিল ৬৫) বেশি বয়সের কোনো পুরুষ এবং কোনো মহিলা, মানসিক প্রতিবন্ধী, ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তি অথবা জটিল অসুখে আক্রান্ত ব্যক্তির বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য তিনি যেখানে থাকেন, সেখানে যেতে হবে। তবে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যদি থানায় গিয়ে বয়ান রেকর্ড করতে চান তাহলে তিনি সেখানে যেতে পারেন।
নতুন আইনে কোনো মহিলা বা শিশু অপরাধের শিকার হলে তার প্রাথমিক চিকিৎসা সহ অন্যান্য চিকিৎসা যে কোনো হাসপাতালে বিনামূল্যে করা যাবে।
রাজ্যসভায় আজ এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে এই তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী বান্দি সঞ্জয় কুমার।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ