আগরতলা, ১৩ অক্টোবর (হি.স.) : ত্রিপুরায় ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর আদিবাসী সম্প্রদায়ের একজন মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের লক্ষ্যে কাজ করার ঘোষণা দিল জনজাতি ভিত্তিক আঞ্চলিক দল তিপ্রা মথা। সোমবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবর্ষী ভবনে এক যোগদান অনুষ্ঠানে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ এই ঘোষণা দেন।
প্রদ্যোত বলেন, “এখন সময় এসেছে একজন আদিবাসী নেতার রাজ্যকে নেতৃত্ব দেওয়ার। আমরা সবসময় দিল্লির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি না। যদি আমাদের নিজস্ব মুখ্যমন্ত্রী থাকে, তবে রাজ্যের স্বার্থে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আমরা নিজেরাই নিতে পারব।” তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “রাজনৈতিক ইচ্ছা থাকলে ককবরকের রোমান লিপি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান রাজ্য বিধানসভার প্রস্তাবের মাধ্যমেই করা যেত।”
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের পর থেকে ত্রিপুরায় কোনও আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রী হননি। সিপিআই(এম)-এর বর্ষীয়ান নেতা দশরথ দেব ছিলেন রাজ্যের প্রথম ও একমাত্র আদিবাসী মুখ্যমন্ত্রী (তাঁর কর্মমেয়াদ ছিল ১৯৯৩–১৯৯৮)।
বিজেপির বিরুদ্ধে পরোক্ষ আক্রমণ চালিয়ে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ অভিযোগ করেন, “তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের দাবিগুলি পূরণে বিলম্ব করছে। আমাদের ধৈর্য পরীক্ষা করে আমাদের মন্ত্রিরা পদত্যাগ করলে তারা আমাদের দোষারোপ করতে পারবে—এই আশায় তারা বসে আছে। কিন্তু এর জবাব দেওয়ার একমাত্র উপায় হল নির্বাচন।”
তিনি আরও জানান, তিপ্রা মথা আসন্ন ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ (টিটিএএডিসি) নির্বাচনে সমস্ত আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং কোনও জাতীয় দলের সাথে জোটে যাবে না। তবে, আইপিএফটি যদি আলোচনায় আগ্রহী হয়, তাহলে সম্ভাব্য জোটের পথ খোলা থাকবে।
টিটিএএডিসি কর্তৃক পাস হওয়া বিলগুলিতে রাজ্যপালের সম্মতি প্রদানে বিলম্বের সমালোচনা করে প্রদ্যোত বলেন, “এখন পর্যন্ত প্রেরিত ৩৮টি বিলের মধ্যে মাত্র একটি বিল—জামাতিয়া প্রথাগত আইনের কোডিফিকেশন—অনুমোদন পেয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশনার আবেদন করেছি।”
এদিনের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক হাজারেরও বেশি কর্মী তিপ্রা মথায় যোগ দেন। অনুষ্ঠানে দলের শীর্ষ নেতা বি.কে. রাঙখল, অনিমেষ দেববর্মা, বৃষকেতু দেববর্মা ও পূর্ণ চন্দ্র জামাতিয়া উপস্থিত ছিলেন।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ