গুয়াহাটি, ১৪ অক্টোবর (হি.স.) : এগারোজন সাংসদের সঙ্গে রঙিয়া এবং লামডিং ডিভিশনের পরিকাঠামো পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার চেতনকুমার শ্রীবাস্তব।
আজ মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত রঙিয়া এবং লামডিং ডিভিশনের পর্যালোচনা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছেন অসম থেকে রাজ্যসভার সদস্য ভুবনেশ্বর কলিতা, লোকসভার সদস্য কামাখ্যা প্রসাদ তাসা (কাজিরঙা), কৃপানাথ মালাহ (করিমগঞ্জ), ফণীভূষণ চৌধুরী (বরপেটা), রঞ্জিত দত্ত (শোণিতপুর), পরিমল শুক্লবৈদ্য (শিলচর), এস সুপোংমেরেন জামির (নাগাল্যান্ড), অমরসিং তিসো (ডিফু), আলফ্রেড কাঙ্গাম এস আর্থার (আউটার মণিপুর), বিজুলি কলিতা মেধি (গুয়াহাটি) এবং সালেং এ সাংমা (তুরা)।
রঙিয়ার ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার অনন্ত সদাশিব এবং লামডিঙের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার সমীর লোহানি সহ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন রেল আধিকারিকগণও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সভার সমন্বয়কারী ছিলেন এনএফ রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (জি) অনুরাগ আগরওয়াল। বৈঠকের লক্ষ্য ছিল উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম সম্পর্কে সংসদ সদস্যদের অবগত করা এবং উন্নত পরিষেবা প্রদানের জন্য জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে গঠনমূলক প্রতিক্রিয়াকে অনুপ্রাণিত করা।
আজ এক প্রেস বার্তায় এ খবর দিয়েছেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা। প্রেস বার্তায় বলা হয়েছে, সাংসদদের স্বাগত জানিয়ে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার জোনের সাফল্য এবং চলমান পদক্ষেপগুলি তুলে ধরেন। সাংসদদের তিনি জানান, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের বর্তমানে মোট ৭,৩৬২ ট্র্যাক কিলোমিটার রেল নেটওয়ার্ক রয়েছে এবং এই নেটওয়ার্ককে আরও সম্প্রসারণের জন্য বেশ কয়েকটি নতুন লাইন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। জেনারেল ম্যানেজার আরও উল্লেখ করেছেন, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে ১০০ শতাংশ রেলওয়ে বৈদ্যুতিকরণের দিকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। ইতিমধ্যেই ৯০ শতাংশের বেশি নেটওয়ার্কে বিদ্যুতায়ন হয়েছে। ডিব্রুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস এবং নাহরলগুন-নিউদিল্লি এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি এখন সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক ট্র্যাকশনের মাধ্যমে চলাচল করছে।
চেতনকুমার শ্রীবাস্তব আরও জানান, নিউ বঙাইগাঁও-আগিয়াঠুরি, নিউ বঙাইগাঁও-আজারা এবং গুয়াহাটি-লামডিঙের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলিতে ডাবল লাইনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং নিউ তিনসুকিয়া পর্যন্ত ডাবল লাইনের কাজ ইতিমধ্যেই অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া, বর্তমানের শরাইঘাট সেতুর কাছে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর একটি নতুন সেতু এবং কামাখ্যা ও গুয়াহাটির মধ্যে একটি তৃতীয় লাইন নির্মাণের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জেনারেল ম্যানেজার বলেন, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে দেশের সবচেয়ে জটিল রেল নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে একটি পরিচালনা করে, যা চ্যালেঞ্জিং পাহাড়ি ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে যায়, যেখানে ভারতীয় রেল ব্যবস্থা জুড়ে সর্বাধিক সংখ্যক টানেল, সেতু এবং দীর্ঘতম এলিফেন্ট করিডোর রয়েছে। সাম্প্রতিক সাফল্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মিজোরামের রাজধানী আইজলকে প্রথমবারের মতো রেল নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং নাগাল্যান্ডের মলভোম থেকে মালবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে পরিকাঠামোগত সুরক্ষা, যাত্রীদের সুবিধা এবং বন্যপ্রাণী সুরক্ষা বৃদ্ধির জন্য আধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-ভিত্তিক প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। তিনি আরও জানান, অমৃত ভারত স্টেশন স্কিমের অধীনে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ৯২টি স্টেশনের আপগ্রেডেশনের কাজ চলছে। এর মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৬০টি স্টেশন রয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, অসমের হয়বরগাঁও স্টেশনটি উত্তরপূর্বের প্রথম অমৃত স্টেশন হয়ে উঠেছে, যার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সাংসদরা উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের সাথে একটি ফলপ্রসূ ইন্টারঅ্যাক্টিভ সেশনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। সাংসদরা রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, স্টেশনগুলির উন্নয়ন এবং ঐতিহ্যবাহী রেল সম্পদ সংরক্ষণের বিষয়ে মূল্যবান পরামর্শ তুলে ধরেন। সাংসদরা উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে পর্যালোচনা বৈঠকের আয়োজন করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। জেনারেল ম্যানেজার পরামর্শগুলি স্বীকার করেছেন এবং আশ্বাস দিয়েছেন যে যতদূর সম্ভব সেগুলি বাস্তবায়ন করা হবে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস