
নয়াদিল্লি, ২৮ অক্টোবর (হি.স.) : কয়লা মন্ত্রক চতুর্দশ দফায় নতুন দিল্লিতে বাণিজ্যিক কয়লা খনি নিলামের কাজ শুরু করবে বুধবার (২৯ অক্টোবর)। এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কয়লা এবং খনি মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এই বিষয়ে জানিয়েছে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)।
পিআইবি-র তরফে জানানো হয়েছে, চতুর্দশ দফার এই সূচনা পর্ব ভারতের কয়লা ক্ষেত্রে স্বচ্ছ্তা, প্রতিযোগিতা এবং স্বনির্ভরতার আর এক মাইল ফলক হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বাণিজ্যিক কয়লা খনি নিলামের প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২০ সালে। কয়লা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং নতুন শিল্প সংস্থাগুলির সক্রিয় যোগদানে যা উত্তরোত্তর এক অনন্য মাত্রা পেয়েছে। দেশীয় কয়লা উৎপাদনের প্রসারের পাশাপাশি দেশের ক্রমবর্ধমান শক্তি ক্ষেত্রের চাহিদা মেটাতে এক নির্ভরযোগ্য সরবরাহ ক্ষেত্রের দিকটিকেও যা সুনিশ্চিত করেছে।
এক্ষেত্রে চতুর্দশ দফা, কয়লা ক্ষেত্রে প্রগতিশীল যাত্রাপথকে একদিকে যেমন এগিয়ে নিয়ে যাবে, তার পাশাপাশি কয়লা খনি ক্ষেত্রে উদারপন্থী মনোভাব এবং ব্যবসায়িক স্বাচ্ছদ্যের প্রসার ঘটাবে। এতে নানা ধরণের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে। সেইসঙ্গে বৃহত্তর শিল্পের অংশগ্রহণের প্রসার ঘটবে, ফলে বাড়বে প্রতিযোগিতা এবং দেশীয় শিল্পগুলির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কয়লার সহজলভ্যতা। সার্বিকভাবে কয়লা ক্ষেত্রে রফতানির নির্ভরতা কমবে এবং আত্মনির্ভর ভারতের দৃষ্টিভঙ্গীর পথে তা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
এই প্রথমবার কয়লা মন্ত্রক এই পরিকাঠামোতেই ভূ-গর্ভস্থ কয়লা গ্যাসীকরণের সংস্থান চালু করছে। এটি একটি কৌশলগত উদ্যোগ। অতি ভূগর্ভস্থ কয়লা সম্পদের ব্যবহার এতে সম্ভব হবে, যা প্রচলিত ব্যবস্থায় এতদিন পর্যন্ত খনন করা সম্ভব ছিল না। এই উদ্ভাবনী পদক্ষেপের ফলে রপ্তানিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এবং কাঁচা তেলের ওপর নির্ভরতা কমবে। অন্যদিকে, বিনিয়োগের নতুন দরজাও খুলে যাবে। কয়লা ক্ষেত্র জুড়ে প্রযুক্তিগত প্রসারলাভ এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
চতুর্দশ পর্বের এই উদ্যোগ একেবারে নতুন অব্যবহৃত এবং আংশিকভাবে ব্যবহৃত কয়লা খনিগুলিকে নিলামের জন্য খুলে দেবে। এতে, অভিজ্ঞ খননকারীদের প্রয়োজন বাড়বে। সেইসঙ্গে প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোগও প্রসারলাভ করবে।
ডিজিটাল ইন্ডিয়া ভিশন উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কয়লা মন্ত্রক রূপান্তরমূলক দুটি ডিজিটাল মঞ্চের সূচনা করবে। এই অনুষ্ঠানে নতুন যে দুটি মঞ্চ আত্মপ্রকাশ করবে, সেগুলি হল ক্ল্যাম্প এবং কয়লা শক্তি পোর্টাল।
ক্ল্যাম্প পোর্টাল হল কয়লা খননের জমি অধিগ্রহণ পরিচালন এবং পেমেন্ট সংক্রান্ত (সিএলএএমপি)। এটি একটি অভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যা গড়ে তোলা হয়েছে কয়লা ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিষয়ে এক ডিজিটাল প্রক্রিয়ার প্রভাবরেখা হিসেবে। এটি ভূমি রেকর্ডের এক কেন্দ্রীয় আধার হিসেবে কাজ করবে।
অন্যদিকে, কয়লা শক্তি ড্যাসবোর্ড একটি প্রথম সারির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। কয়লা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং সময় ধরে সমন্বয়ের এক বৈপ্লবিক প্রয়াস। খনি থেকে বাজার পর্যন্ত এক অভিন্ন ইন্টারফেসের মাধ্যমে সামগ্রিক কয়লা শৃঙ্খলকে যা সংযুক্ত করবে।
কয়লা মন্ত্রক শিল্প নেতৃত্ব, বিনিয়োগকারী এবং অংশীদারদের এই উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়েছে, যা ভারতের ভবিষ্যৎ শক্তি পরিমন্ডল গড়ে তুলতে এক নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে।
বিকশিত ভারতের লক্ষ্যপূরণে এগিয়ে যাওয়ার পথে সংস্কারের পাশাপাশি ব্যবসায় স্বাচ্ছন্দ্য বিধান এবং কয়লা খনির পরিবেশকে সুস্থায়ী ও দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তোলার পথে কয়লা মন্ত্রকের এই উদ্যোগ এক অবিচল দায়বদ্ধতার সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ