- উত্তর অসম প্রান্তের ৩২০টি শাখায় ৪০ হাজারের বেশি পূর্ণ গণবেশধারী স্বয়ংসেবক সহ লক্ষাধিক নাগরিকের সংঘের শতাব্দীবর্ষ বিজয়া দশমী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ
গুয়াহাটি, ৫ অক্টোবর (হি.স.) : নানা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আজ রবিবার রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর শতবৰ্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়েছে। আজ গুয়াহাটি মহানগর সহ উত্তর অসম প্রান্তের ৩২০টি শাখায় ৪০ হাজারের বেশি পূর্ণ গণবেশধারী স্বয়ংসেবক সহ লক্ষাধিক নাগরিকের সংঘের শতাব্দীবর্ষ বিজয়া দশমী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন।
রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘের উত্তর অসম প্ৰান্তের ৩৯টি জেলার ৫৭টি শহর এবং ৩০০টি খণ্ড (ব্লক পর্যায়)-এর মোট ৩২০টি স্হানে আজ বিজয়া দশমী উৎসবের পাশাপাশি সংঘের শতাব্দীবৰ্ষের শুভারম্ভ কাৰ্যক্ৰম অনুষ্ঠিত হয়েছে৷
এদিকে আজ শনিবার গুয়াহাটি মহানগরের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি হেঙেরাবাড়ির বড়বাড়িতে অবস্থিত আরএসএস-এর উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সদর দফতর সুদৰ্শনালয়-এও সংঘের শতাব্দীবৰ্ষের শুভারম্ভ কাৰ্যক্ৰম অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাধব নগর শাখার শতাধিক পূৰ্ণ গণবেশধারী স্বয়ংসেবক শারীরিক ব্যায়াম, দণ্ড চালনা, সাংঘিক গীত ইত্যাদি পরিবেশন করেছেন উপস্থিত অতিথি এবং নাগরিকদের সামনে।
সুদৰ্শনালয়-এ অনুষ্ঠিত কার্যক্রমে প্রধান অতিথি হিসেবে সংঘ সম্পর্কে বক্তব্য পেশ করেছেন সাংবাদিক সুশীল পাটোয়ারি। প্রধান বক্তা হিসেবে বৌদ্ধিক দিয়েছেন সংঘের প্রচারক তথা হিন্দু জাগরণ মঞ্চ-এর সংগঠনমন্ত্রী বাবলু বরা। সদ্য প্রয়াত অসমের সুসন্তান জুবিন গর্গকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বৌদ্ধিক দিতে গিয়ে সংঘের সূচনা থেকে শতবর্ষে পদর্পণ পর্যন্ত বিস্তৃত বর্ণনা করেছেন বাবলু বরা।
তিনি বলেন, স্বামী বিবেকানন্দের ভাবাদর্শকে শিরোধার্য করে মাত্র দশ-বারোজনকে সঙ্গে নিয়ে ১৯২৫ সালের বিজয়া দশমীর দিন পরম পূজনীয় ডা. কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড় নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বামীজি দেশ গঠনে সাহসী, দেশপ্রেমিক, নিষ্ঠাবান, চরিত্রবান ১০০ জন যুবক চেয়েছিলেন। স্বামীজির ওই আহ্বানে উদ্বুদ্ধ হয়ে ডাক্তারজি দেশ ও সমাজ গঠনে কার্যকর্তা নির্মাণে লেগে যান। তিনি সমাজের প্রতি স্বয়ংসেবকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য, অনুশাসিত জীবনশৈলী, আধ্যাত্মিকতা, ভারতবর্ষের সাংগঠনিক শক্তি ইত্যাদি বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেছেন।
এদিকে সংঘের উত্তর অসম প্রান্ত প্রচারপ্রমুখ কিশোর শিবম এক প্রেস বিজ্ঞপ্ততি বলেছেন, ডা. কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড়ের মতো একজন মনীষীর চিন্তা-ভাবনায় যে সংগঠন ১৯২৫ সালে জন্ম নিয়েছিল, সেই সংগঠন রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবার ২০২৫ সালের বিজয়া দশমীর দিন একশো বছর পূৰ্ণ করেছে৷ এ মুহূর্তে ভারত সহ বিশ্বের প্ৰায় ৩৪টি দেশে বিভিন্ন নামে রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘ কাজ করছে৷
স্বামীজির স্বপ্নের মহান ভারতবৰ্ষকে বিশ্বগুরুর আসনে অধিষ্ঠিত করার পাশাপাশি হিন্দু সমাজকে সংগঠিত করা, হিন্দু সমাজক স্বভিমানী করা, হিন্দু সমাজকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ভারতের কোণায় কোণায় প্রতিটি সমাজে সংঘ কার্যকর্তা নির্মাণ করে চলেছে। সংঘের স্বয়ংসেবকরা বিভিন্ন প্ৰাকৃতিক, আকস্মিক দুৰ্যোগের সময় নিঃস্বাৰ্থভাবে সমাজ সেবার কাজ করছে। বন্যা, ভূমিকম্পের মতো আপৎকালীন সেবাকাৰ্য থেকে বিনামূল্যের স্বাস্থ্য শিবির, রক্তদান, করোনাকালে নিজের জীবনের কথা না ভেবে স্বয়ংসেবকরা সমাজে গিয়ে নগরিকদের সেবা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমাজহিতৈষী কাজ করে আসছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সংস্কার, স্বাবলম্বিতা প্রভৃতি ক্ষেত্ৰেও রাষ্ট্ৰীয় স্বয়ংসেবক সংঘের আদৰ্শে পরিচালিত প্ৰায় ৩২টি বিবিধ সংগঠন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীরবে কাজ করে আসছে। অসমে ১৯৪৬ সাল থেকে সংঘের কাজ শুরু হয়েছিল, আজও নিরন্তর চলছে৷
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শিবম জানান, ভৌগলিক পরিস্থিতি, দিন এবং সময় অনুযায়ী বিজয়া দশমী উৎসব ২ এবং ৫ অক্টোবর দুদিন পালন করা হয়েছে৷ সে অনুযায়ী ২ অক্টোবর উত্তর অসম প্ৰান্তের ১৭টি স্থানে স্বয়ংসেবকরা বিজয়া দশমী উৎসব পালন করেছেন৷ এর মধ্যে মেঘালয়ের পূর্ব জয়ন্তিয়াপাহাড় জেলার ফেরিয়াত নগর, অসমের বাকসা জেলা সদর সহ জেলার মুসলপুর শহর, বরপেটা, নলবাড়ি, চড়াইদেও প্রভৃতি জেলার অন্য ১৫টি খণ্ডের মোট ১৭টি জায়গায় স্বয়ংসেবকরা শতবৰ্ষে বিজয়া দশমী উৎসব পালন করেছেন৷
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস