ভিন রাজ্যে কদর ও আয় বেশি, ঢাক বাজাতে পাড়ি দিচ্ছেন বাঁকুড়ার ঢাকিরা
বাঁকুড়া, ৮ অক্টোবর (হি.স.): বাঁকুড়ার ঢাকিদের ভরসা নিজের জেলা নয়, ভিন রাজ্য। কারণ, সেখানেই মেলে কদর, সম্মান ও ভালো আয়। জেলার ছাতনা ব্লকের কুলাড়া ও আশপাশের গ্রামগুলির ঢাকিদের মতে, নিজের জেলায় ঢাক বাজিয়ে সংসার চালানো কঠিন, কিন্তু ভিন রাজ্যে গিয
ভিন রাজ্যে কদর ও আয় বেশি, ঢাক বাজাতে পাড়ি দিচ্ছেন বাঁকুড়ার ঢাকিরা


বাঁকুড়া, ৮ অক্টোবর (হি.স.): বাঁকুড়ার ঢাকিদের ভরসা নিজের জেলা নয়, ভিন রাজ্য। কারণ, সেখানেই মেলে কদর, সম্মান ও ভালো আয়। জেলার ছাতনা ব্লকের কুলাড়া ও আশপাশের গ্রামগুলির ঢাকিদের মতে, নিজের জেলায় ঢাক বাজিয়ে সংসার চালানো কঠিন, কিন্তু ভিন রাজ্যে গিয়ে বাজালে তুলনায় অনেক বেশি রোজগার হয়।

কুলাড়া গ্রাম প্রায় ৯০টি পরিবারের একটি “ঢাকিদের গ্রাম” নামে পরিচিত। প্রায় প্রতিটি পরিবারের কেউ না কেউ ঢাক বাজানোর পেশায় যুক্ত। শুধু ছাতনা নয়, গঙ্গাজলঘাটি, মেজিয়া, ওন্দা প্রভৃতি ব্লকের বহু পরিবারও এই পেশার ওপর নির্ভরশীল। সারা বছর মিছিল, সভা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা মেলায় এদের দেখা মেলে। তবে অধিকাংশ সময়ই পারিশ্রমিক পান না বলেই অভিযোগ।

পুজোর পর ভিন রাজ্য থেকে ফিরে এসে ঢাকিরা জানিয়েছেন, সংসার চালানোর জন্য মুখ বুজে অন্যায় মেনে নিতে হয়। রাজ্য সরকারের লোকপ্রসার প্রকল্পে তারা প্রায় উপেক্ষিত। কয়েক বছর আগে অনগ্রসর কল্যাণ দফতর ও বিডিও অফিসের মাধ্যমে কিছু ঢাকিকে প্রচারের কাজে নিয়োগ দেওয়া হলেও পরে সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে জীবিকার অনিশ্চয়তা থেকেই গেছে।

ঢাকি মহাদেব কালিন্দী, সন্তোষ কালিন্দী, ভীম কালিন্দী, অনন্ত কালিন্দী ও শ্রীকান্ত কালিন্দী জানান, তাঁরা প্রায় ২৫ বছর ধরে ঢাক বাজাচ্ছেন। কিন্তু রাজ্যে সম্মান বা পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক না পেয়ে বাধ্য হয়ে পূজার মরসুমে পরিবারের থেকে দূরে চলে যান ভিন রাজ্যে। দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এমনকি এবার ভেলোরেও ডাক এসেছে।

পুজোর পর ভিন রাজ্য থেকে ফিরে এসে তাঁরা এও জানিয়েছেন, “এই রাজ্যে ঢাক বাজিয়ে যতটা আয় হয়, তাতে সংসার চলে না। ভিন রাজ্যে শুধু ভালো পারিশ্রমিকই নয়, উপহার ও সম্মান দুটোই পাই।” শিল্পী ভাতা বা সরকারি সাহায্যের জন্য আবেদন করেও কিছু পাননি। ফলে পূজার আনন্দের মধ্যেও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে কাটে তাঁদের উৎসবের দিনগুলি।

দীপাবলীর সময়ও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ডাক আসছে জেলার ঢাকিদের কাছে। তাঁদের আশা, ভিন রাজ্যের মতো এখানেও যদি সম্মান ও সুযোগ মেলে, তবে নিজের মাটিতেই তাঁরা খুঁজে পাবেন জীবিকার নিশ্চয়তা।

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট




 

 rajesh pande