এখনও আলপথেই ভরসা আমানিডাঙার, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় খাটিয়ায় করে
দুর্গাপুর, ৮ অক্টোবর (হি.স.) : পথশ্রী প্রকল্পে যখন রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের ঢাক, তখনও পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ব্লকের আমানিডাঙা ও বাবলাবনি গ্রামের মানুষ আঁধারে। রাস্তার দাবিতে গত ৯ বছর ধরে ভোট বয়কট করেও মেলেনি পাকা রাস্তা। এখনও জল-কাদায় ভরা আলপথই তাদের এ
এখনও আলপথেই ভরসা আমানিডাঙার, অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় খাটিয়ায় করে


দুর্গাপুর, ৮ অক্টোবর (হি.স.) : পথশ্রী প্রকল্পে যখন রাজ্যজুড়ে উন্নয়নের ঢাক, তখনও পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ব্লকের আমানিডাঙা ও বাবলাবনি গ্রামের মানুষ আঁধারে। রাস্তার দাবিতে গত ৯ বছর ধরে ভোট বয়কট করেও মেলেনি পাকা রাস্তা। এখনও জল-কাদায় ভরা আলপথই তাদের একমাত্র ভরসা। অসুস্থ রোগী থেকে পড়ুয়ারা—সবাইকে আজও সেই কাদামাখা মেঠোপথে পাড়ি দিতে হয়।

কুনুর নদীর তীরে দেবশালা পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই দুই গ্রামে প্রায় ৬৫টি জনজাতি পরিবারের বসবাস। পেশায় অধিকাংশই দিনমজুর। গ্রামের রাস্তায় নেই মোরামের দানা, মোটরগাড়ি তো দূর, সাইকেল বা রিকশাও চলাচল করতে পারে না। বর্ষাকালে কাদা আর জলেই তলিয়ে যায় আলপথ। কিছুদিন আগেই বাবলাবনি গ্রামের বুধি মুর্মু নামে এক বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে খাটিয়ায় চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হন গ্রামবাসীরা। সেই দৃশ্য সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, “২০১৬ সালে ভোট বয়কট করেছিলাম রাস্তার দাবিতে। তার পর ২০১৯ ও ২০২১–এও ভোট দিইনি। কিছুটা রাস্তা সাংসদ তহবিলের টাকায় কংক্রিট করা হলেও বাকিটা আজও মেঠোপথ। উন্নয়নের ফিরিস্তি শুনে ক্লান্ত আমরা। অন্তত এমন মোরামের রাস্তা চাই, যাতে রিকশা–ভ্যান ঢুকতে পারে।”

স্থানীয় বিজেপি নেত্রী কলিতা মাজির অভিযোগ, “পথশ্রীর নামে প্রতারণা চলছে। বামেরা যেমন বঞ্চনা করেছে, তৃণমূলও তাই করছে। দুয়ারে সরকার আর পাড়ায় সমাধান—সবই ভোটের আগে প্রচার মাত্র। বাস্তবে কোনও উন্নয়ন হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্র সরকার আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা পাঠায়, অথচ সেই টাকা তৃণমূল সরকার খরচ করছে না।”

অন্যদিকে দেবশালা পঞ্চায়েতের প্রধান বিথীকা মেটে জানিয়েছেন, “অমানিডাঙা–বাবলাবনির রাস্তার কাজ অনুমোদিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই নির্মাণ শুরু হবে।”

উল্লেখ্য, গ্রামের কিছু অংশ পূর্ব বর্ধমানের আওতায় হলেও, বাকিটা পড়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলার কাঁকসা ব্লকে। মাঝপথে প্রায় দুই হাজার ফুট রাস্তা চাষ জমির মধ্যে, মানচিত্রেই সেই রাস্তা নেই। ফলে জমি জটেই আটকে রয়েছে উন্নয়নের পথ। গ্রামবাসীদের প্রশ্ন—‘পথশ্রী’ যদি প্রকৃত উন্নয়নের প্রতীক হয়, তবে আমাদের গ্রামের রাস্তা এখনও কাদা আর কষ্টে ঢাকা কেন?

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / জয়দেব লাহা




 

 rajesh pande