পূর্ণিমার কোটালে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত গোসাবার পুঁইজালি, ব্যাপক ক্ষতি এলাকায়
দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ৮ অক্টোবর (হি.স.) : পূর্ণিমার ভরা কোটালের জলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল দক্ষিণ ২৪ পরগণার গোসাবার আমতলি গ্রাম পঞ্চায়েতের পুঁইজালি গ্রাম। প্রায় ৩০০ ফুটের মত রায়মঙ্গল নদীর বাঁধে ধস নামে বুধবার সকালে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জোয়ারের জল
পূর্ণিমার কোটালে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত গোসাবার পুঁইজালি, ব্যাপক ক্ষতি এলাকায়


দক্ষিণ ২৪ পরগণা, ৮ অক্টোবর (হি.স.) : পূর্ণিমার ভরা কোটালের জলের তোড়ে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হল দক্ষিণ ২৪ পরগণার গোসাবার আমতলি গ্রাম পঞ্চায়েতের পুঁইজালি গ্রাম। প্রায় ৩০০ ফুটের মত রায়মঙ্গল নদীর বাঁধে ধস নামে বুধবার সকালে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জোয়ারের জল বাড়লে সেই নোনা জল গ্রামে ঢুকে চাষের জমি থেকে শুরু করে পুকুর সবই ভাসিয়ে নিয়ে যায়। প্রায় পাশাপাশি চারটি গ্রাম বর্তমানে জলের তলায়।

মঙ্গলবার রাতে গোসাবার সোনাগাঁ এলাকায় নদী বাঁধে ফাটল দেখা দেয়। বেশ কিছুটা জায়গায় ধসও নামে। রাতেই সেচ দফতরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেন। সেখানে দুর্গাদোয়ানি নদীর বাঁধ ভেঙে বা উপছে নোনা জল গ্রামে ঢুকতে পারেনি। কিন্তু বুধবার সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ এই পুঁইজালি গ্রামে প্রায় ১০০ মিটার নদী বাঁধে বিশাল ধস নামে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জোয়ারের জল বাড়তে শুরু করলে সেই ধসের জায়গা থেকে নোনা জল গ্রামে ঢুকে পড়ে। সেচ দফতরের কর্মীরা বাঁধ মেরামতির কাজে হাত লাগানোর আগেই পুঁইজালির পেটুয়া পাড়া, মাস্টার পাড়া সহ চারটি গ্রাম এই নোনা জলের তলায় চলে যায়। দুপুরের পর থেকে ভাটা শুরু হলে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। গোসাবার সেচ দফতরের আধিকারিক শুভদ্বীপ দালাল বলেন, “ পূর্ণিমার কোটালে জলের চাপ এতটাই ছিল যে ভালো নদী বাঁধে ধস নেমেছে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে দ্রুত রিং বাঁধ দিয়ে এই নোনা জল গ্রামে ঢোকা বন্ধ করা যায়।”

এদিকে এই বাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। গোসাবার জেলা পরিষদের সদস্য অনিমেষ মণ্ডল বলেন, “ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জন্যই এই বাঁধ সঠিক ভাবে মেরামতি করা যাচ্ছে না। ২৭২ কিমি নদী বাঁধ রয়েছে গোসাবা ব্লকে। তার মধ্যে ৫০ কিমি নদী বাঁধের অবস্থা সংকটজনক। এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে রাখার কারণে পঞ্চায়েত থেকে বাঁধের মেরামতি করা যাচ্ছে না। তাই এই দুর্গতি হল সুন্দরবনের মানুষের।” তিনি আরও বলেন, “ এই বাঁধ ভাঙার ফলে ক্ষতি হয়েছে প্রায় কাঁচা পাকা ৫০০ বাড়ি। প্রায় ৩ হাজার বিঘা চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকে ধানের ক্ষতি করেছে। অন্যদিকে ৬ কিমির মত রাস্তাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর দায় কে নেবে?”

বিজেপি নেতা সঞ্জয় নায়েক বলেন, “ ১০০ দিনের টাকা যেভাবে চুরি করেছে এই সরকার তাতে কোন মুখে এরা আবার টাকা চায়? কংক্রিটের নদী বাঁধের টাকা তো কেন্দ্র দিয়েছিল এরা তা সঠিক ভাবে ব্যবহার করেনি বলেন, সেই কাজ হয়নি।”

এদিকে ব্লক প্রশাসনের তরফে এলাকায় ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে এলাকায়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানার চেষ্টা করছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও বিশ্বরূপ বিশ্বাস বলেন, “ এলাকায় ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ভাটার সময় জল নেমে গিয়েছে এলাকা থেকে অনেকটা, ফলে প্রায় সকলেই নিজের নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। মোট কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা জানার চেষ্টা চলছে।”

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / পার্সতি সাহা




 

 rajesh pande