
মুম্বই, ৩ নভেম্বর (হি.স.): আগে দু'বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও শিরোপাটা ছুঁয়ে দেখা হয়নি ভারতের। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়া আর ২০১৭ সালে ভারতের ইংল্যান্ডএর কাছে হেরে ভারতের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। তবে এবার আর স্বপ্নভঙ্গ হয়নি ভারতীয় মেয়েদের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে প্রথমবার মহিলা ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলো ভারত।
রবিবার (২ নভেম্বর) নবি মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগে ব্যাট করতে নেমে ভারত স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি বর্মার উদ্বোধনী জুটি থেকেই আসে ১০৪ রান। শেফালি ও দীপ্তির ফিফটি এবং স্মৃতির ৪৫ রানের ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৯৮ রানের পুঁজি পায় ভারত।
জবাব দিতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা সব উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান করতে সমর্থ হয়। এক প্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করেছেন অধিনায়ক লরা ভলভার্ট। ৯৮ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বিদায় দীপ্তির বলে আউট হয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার লরা ভলভার্ট ও তাজমিন ব্রিটসের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৫৭ বলে ৫১ রান। ৩৫ বলে ২৩ রান করে রান আউট হন ব্রিটস। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে আনিকা বশ মাত্র ৬ বলে কোনো রান না করেই আউট হন শ্রী চরণীর বলে এলবিডব্লিউ আউট হয়ে।
এরপর তৃতীয় উইকেট জুটিতে সুনে লুসকে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ভলভার্ট। শেফালির বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সুনে লুস ২৫ রান করে। মারিজানও বেশিক্ষণ থাকতে পারেন নি। বিদায় নিয়েছেন ৪ রান করে। সিনালো জাফতা ফেরেন ১৬ রান করে। এরপর আনেরি ডের্কসেনকে নিয়ে ৬১ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ভলভার্ট। দীপ্তির বলে বোল্ড হয়ে ৩৫ রান করে ফিরে যান ডের্কসেন। অধিনায়ক লরা ভলভার্ট একাই লড়াই করে সেঞ্চুরি করেন। তবে তিনি দলকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও পারলেন না। ৯৮ বলে ১০১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বিদায় দীপ্তির বলে আউট হন। এরপর বাকিরা তেমন সুবিধা করতে পারেননি।সব উইকেট হারিয়ে ২৪৬ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এর আগে বৃষ্টির কারনে খেলা দেরিতে শুরু হয়। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভারতকে দারুণ শুরু এনে দেয় স্মৃতি মান্ধানা-শেফালি বর্মার ওপেনিং জুটি। ১৭.৪ ওভারে এই জুটি করেন ১০৪ রান। ৫৮ বলে ৮ চারে ৪৫ রান করেন স্মৃতি। স্মৃতির বিদায়ের পর সেমিফাইনালে ভারতের জয়ের নায়ক জেমিমা রদ্রিগেজ ব্যাট করতে আসেন। শেফালির সঙ্গে ৬২ রানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু দলীয় ১৬৬ রানে সেঞ্চুরির মুখে থাকা শেফালি ৭৮ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৮৭ রান করে খাকার বলে লুসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। তিনি। বলা যেতে পারে শেফালির এই রান ভারতকে জয়ের পথ দেখিয়েছে।
আর আগের ম্যাচে ভারতের জয়ের নায়ক রদ্রিগেজ এদিন ভালো খেলতে পারেননি। তিনি আউট হন ২৪ রানের ইনিংস খেলে।আর অধিনায়ক হারমানপ্রীতও বড় রান করতে পারেননি। ২০ রান করে এমলাবার বলে বোল্ড হন তিনি। আর ডি ক্লার্কের বলে তার হাতেই ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আমানজীত, তিনি করেন ১২ বলে ১৪ রান।
এদিন পাঁচে নামা দীপ্তি ও সাতে নামা রিচা ঘোষ দুর্দান্ত খেলেন । দীপ্তি-রিচার দারুণ জুটি ভারতকে তিনশ'র বেশি রানের আশা দেখাচ্ছিল। কিন্তু ৪৯ ওভারের শেষ বলে আউট হন রিচা। ৩৪ রান করেন রিচা। অর্ধশতক হাঁকানো দীপ্তি ইনিংসের একদম শেষ বলে রানআউট হন। ৫৮ বলে ৫৮ রান করেন তিনি। ৩ রানে অপরাজিত থাকেন রাধা যাদব। প্রোটিয়াদের পক্ষে খাকা ৩টি, এমলাবা, ডি ক্লার্ক এবং ত্রিয়ন ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ হয়েছেন শেফালি বর্মা আর প্লেয়ার অব দা টুর্নামেন্ট হয়েছেন দীপ্তি শার্মা।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / শান্তি রায়চৌধুরি