

গুয়াহাটি, ২১ ডিসেম্বর (হি.স.) : নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ রবিবার সকালে গুয়াহাটির ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে নৌভ্রমণ করতে করতে অসমের নির্বাচিত ২৫ জন স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীর সঙ্গে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মতবিনিময় করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’-র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মোদী শিক্ষার্থীদের মানসিক সুস্থতার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে তিনতলা বিশিষ্ট জাহাজ এমভি চড়াইদেউ ২-এ অবস্থান করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্বাচিত ২৫ জন স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীর সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। আলোচনায় পরীক্ষার চাপ মোকাবিলা, মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা এবং পড়াশোনায় ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন মোদী।
গত ৭ নভেম্বর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের হাতে উদ্বোধিত গুয়াহাটি গেটওয়ে টার্মিনাল (ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট)-এ গিয়ে ভাসমান সেতু দিয়ে জাহাজে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাঁর কর্মসূচি চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী জাহাজের উপরের ডেক থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলেছেন।
নিরাপত্তার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় ব্রহ্মপুত্রের সংশ্লিষ্ট নদীপথে। ভোর থেকেই রিভার পুলিশ, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) এবং রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এসডিআরএফ) মোতায়েন ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সফরের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকাল শনিবার থেকে দু’দিনের জন্য ব্রহ্মপুত্রে ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়।
‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে প্ৰদানমন্ত্ৰীর সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য রাজ্যের ১২টি জেলা থেকে যে ২৫ জন স্কুলপড়ুয়া সুযোগ পেয়েছে তাঁরা যথাক্রমে কামরূপ (মহানগর)-এর রয়্যাল গ্লোবাল স্কুলের দশম শ্ৰেণির ছাত্ৰ বিহান উপাধ্যায়, ডন বসকো স্কুলের নবম শ্ৰেণির ছাত্ৰী অনহিতা সিং (কামরূপ মেট্রো), উত্তর গুয়াহাটি গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্ৰেণির ছাত্ৰী অর্পিতা দাস (কামরূপ মেট্রো), অসম জাতীয় বিদ্যালয়ের নবম শ্ৰেণির ছাত্রী নিষ্ঠা বড়গোহাঁই (নুনমাটি, কামরূপ মেট্রো), শংকরদেব বিদ্যা নিকেতনের নবম শ্ৰেণির ছাত্ৰী শুভ্রজিতা বর্মণ (গুয়াহাটি, বিষ্ণুপথ, কামরূপ মেট্রো), গুয়াহাটি খানাপাড়া কেন্দ্ৰীয় বিদ্যালয়ের একাদশ শ্ৰেণির ছাত্ৰী ত্রিদিশা মালাকার (কামরূপ মেট্রো), কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের একাদশ শ্ৰেণির ছাত্ৰ অভিনীত বরুয়া (মালিগাঁও, কামরূপ মেট্রো), মরিগাঁওয়ের পিএম শ্রী আদর্শ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্ৰী কৃষ্টিজিনা বরা, কামরূপ (গ্রামীণ জেলা)-এর দকুচি আদর্শ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্ৰী অচ্ছেতা শর্মা, কামরূপ (গ্রামীণ জেলা)-এর রঙিয়া জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্ৰ সোফুর রহমান, কামরূপ (গ্রামীণ জেলা)-এর পিএম শ্রী দমদামা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্ৰ রঞ্জন কলিতা, মরিগাঁও জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্ৰ নাঈম মাসুদ, ডিব্রুগড় জেলার মরান বাল্য বিকাশ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্ৰ তন্ময় চুতিয়া, কাছাড় জেলা সদর শিলচরের মালুগ্রামে অবস্থিত সরস্বতী বিদ্যা নিকেতনের দশম শ্রেণির ছাত্ৰী দেবাঞ্জলি ভট্টাচার্য, শ্রীভূমি জেলার দুল্লভছড়ায় অবস্থিত চরগোলা ভ্যালি পাবলিক হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্ৰী আনন্দিতা মিশ্র, কাছাড় জেলা সদর শিলচরের নরসিং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্ৰ পীযূষ দেবনাথ, ডিব্রুগড়ের মাজিয়ান চা বাগান মডেল স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্ৰী পল্লবী কর্মকার, ডিব্রুগড়ের ডিরিয়াল চা বাগান মডেল স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্ৰ বিকাশ ভূমিজ, বাকসা জেলার শালবাড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্ৰ অমিত দৈমারি, ডিমা হাসাও জেলা সদর হাফলঙের সরকারি বালক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্ৰ থাইসিন্দগাঁও থাওসেপ, কোকরাঝাড় জেলার পাটগাঁও কেজিবি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্ৰী যশ্না বসুমতারি, মরিগাঁও জেলার পিএম শ্রী জলুগুটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্ৰী জেনিফা আহমেদ, গোলাঘাট জেলার গোলক বরবরা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্ৰী দিশা মির্ধা, কারবি আংলং জেলার পিএম শ্রী জেং রংপি ইংলিশ হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্ৰী ক্রিস্টিনা বেইপেই এবং নলবাড়ির সরকারি গার্ডন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্ৰী দৃষ্টি গোস্বামী।
প্ৰসঙ্গত, অসমে এই প্ৰথম ব্ৰহ্মপুত্ৰের বুকে চলন্ত জাহাজে অনুষ্ঠিত ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্ৰধানমন্ত্ৰীর সঙ্গে কীভাবে বার্তালাপ করা হবে, কীভাবে প্ৰধানমন্ত্ৰীকে প্রশ্ন করতে হবে, কীভাবে বসতে হবে ইত্যাদি নানা বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। সমগ্র শিক্ষা অসম-এর অধীনে রাজ্যের শিক্ষা বিভাগের কাৰ্যালয়ে প্ৰশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। রাজ্যের যে সকল ছাত্রছাত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর ‘পরীক্ষা পে চৰ্চা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য বাছাই করা হয়েছিল তাদের গুয়াহাটির গণেশগুড়ির একটি হোটেলে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাখা হয়েছিল।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস