
তেলিয়ামুড়া (ত্রিপুরা), ২২ ডিসেম্বর (হি.স.) : ত্রিপুরার আত্মসমর্পণকারী তিন প্রাক্তন জঙ্গি সংগঠন—জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি (জে.এ.সি), জয়েন্ট অ্যাকশন রিটার্নস কমিটি (জে.এ.আর.সি) এবং ডেমোক্রেটিক রিভল্যুশনারি মিলিট্যান্ট কমিটি (ডি.আর.এম.সি)—সোমবার সকাল থেকে তেলিয়ামুড়ায় অসম-আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ‘ত্রিপুরা গেরিলা রিটার্নস ডিমান্ড কমিটি’ নামে একত্রিত এই সংগঠনগুলির অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সরকারের কাছে রাখা তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উপেক্ষিত হয়ে আসছে।
বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি—আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের জন্য বরাদ্দ ২৩ কোটি টাকার বোর্ড রিহ্যাবিলিটেশন প্যাকেজ অবিলম্বে পুনরায় চালু করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী রাবার মিশন এর আওতায় অনুমোদিত ১৬,৮০০টি রাবার চারা ও বেড়া নির্মাণের বাজেট বহাল রাখতে হবে; তা ৬,০০০-এ নামিয়ে আনা চলবে না। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা প্রাক্তন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
অবরোধ শুরু হতেই জাতীয় সড়কের দুই দিকে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী শতাধিক গাড়ি আটকে পড়ে। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও ক্ষোভ ও উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার খবর পেয়ে জিরানিয়া মহকুমা শাসক অনিমেষ ধরের নেতৃত্বে বিশাল প্রশাসনিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধকারীদের সঙ্গে একাধিক দফায় আলোচনা করেন। প্রায় চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টার টানাপোড়েনের পর সংগঠনগুলি অবশেষে অবরোধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
সংগঠনের অভিযোগ, “আমরা অস্ত্র ছেড়ে শান্তির পথে ফিরেছি। কিন্তু সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ। পুনর্বাসনের নামে শুধু আশ্বাস মিলছে, বাস্তবে কোনও উদ্যোগ নেই।”
এই ঘটনার পর আবারও সামনে এল আত্মসমর্পণকারী জঙ্গিদের পুনর্বাসন ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়টি। বিশ্লেষকদের মতে, সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে অস্ত্র ফেলে ফিরে আসা প্রাক্তন জঙ্গিদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বাড়তে পারে। আন্দোলনকারীরাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—দাবি না মানা হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।সোমবারের অবরোধকে প্রশাসনের কাছে শুধু সাধারণ বিক্ষোভ নয়, বরং একটি সতর্কবার্তা হিসেবেই দেখছেন পর্যবেক্ষকরা।
হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ