
গুয়াহাটি, ২৩ ডিসেম্বর (হি.স.) : কারবি আংলঙে ‘অ-উপজাতি' জনসংখ্যা এখন ৬৫ শতাংশ এবং ‘উপজাতি’রা ৩৫ শতাংশ বলে যে দাবি করা হচ্ছে, কার্যত এই দাবির সত্যতা কতটুকু? পশ্চিম কারবি আংলঙের খেরনিতে চলমান অশান্তি প্রসঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, উচ্ছেদ প্রক্রিয়া সংঘাতের মাধ্যমে সংগঠিত করা যায় না, গণতান্ত্রিক কাঠামোয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। কোনও ধরনের সহিংসতা এবং বলপূর্বক উচ্ছেদ বরদাস্ত করা হবে না, সতৰ্কবাৰ্তা মুখ্যমন্ত্রীর।
মুখ্যমন্ত্ৰী ড. শৰ্মা বলেন, একাংশ কারবি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি ধারণা সৃষ্টি করা হয়েছে, ‘কারবি আংলঙে উপজাতিভুক্ত কারবিদের এখন জনসংখ্যা ৩৫ শতাংশে নেমে গেছে। আর অ-উপজাতিরা হয়ে গেছেন ৬৫ শতাংশ। তাই তারা মনে করে অন্যদের উচ্ছেদ করা উচিত। এ ধরনের পরিসংখ্যান তারা কোথায় পেয়েছেন?’ বলে এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্ৰী।
হিমন্তবিশ্ব বলেন, ‘তারা বলছে, অ-উপজাতিরা ভিজিআর (ভিলেজ গ্রেজিং রিজার্ভ), পিজিআর (প্রফেশনাল গ্রেজিং রিজার্ভ) এবং সরকারি জমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এই ৩৫ শতাংশ ডেটা কোথা থেকে এসেছে তা কেউ জানে না।’
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আলাপ-আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা বলেন, ‘সরকার একটি সমাধানে পৌঁছানোর জন্য সমস্ত অংশীদারদের সঙ্গে বসতে চায়। আমরা তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। সবার সাথে আলাপ-আলোচনা করে সমাধান করতে হবে আমাদের।’
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘কারবি আংলঙে যেভাবে তাঁরা দাবি আদায়ের চেষ্টা করছে তা সম্ভব নয়। কোনও ধরনের সহিংসতা এবং বলপূর্বক উচ্ছেদ বরদাস্ত করা হবে না।’ বলেন ‘আমরা মানুষকে হত্যা করতে পারি না, জবরদস্তি তাঁদের উচ্ছেদও করতে পারি না। এর একটা প্রক্রিয়া আছে। বিধিসম্মতভাবে সবকিছু করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অসম যখন অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরোধিতা করে, তখন যে কোনও পদক্ষেপ অবশ্যই সাংবিধানিক সীমার মধ্যে থেকে করতে হবে। অসমে বাংলাদেশ থেকে আগত অবৈধ অভিবাসীদের (অনুপ্রবেশকারী) আমরা পছন্দ করি না। কিন্তু আমরা তাঁদের মারতে পারি না এবং বিধি বহির্ভূতভাবে উচ্ছেদও করতে পারি না। মনে রাখতে হবে, ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, সবকিছু গণতান্ত্রিক নিয়মের মাধ্যমে করতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্ৰী জোরের সঙ্গে বলেন, ‘সরকার খেরনির পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আশা করি, আলাপ-আলোচনা এবং আইনি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
প্রসঙ্গত, ভিজিআর এবং পিজিআর হলো অসমের মনোনীত ভূমি বিভাগগুলি ঐতিহ্যগতভাবে গবাদি পশু চারণের জন্য সংরক্ষিত। গ্রামের গবাদি পশুর জন্য ভিজিআর এবং বিস্তৃত বা বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য পিজিআর। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ওই জমিগুলিতে জবরদখল হচ্ছে বলে তাদের উচ্ছেদ করার দাবি উঠেছে।
হিন্দুস্থান সমাচার / সমীপ কুমার দাস