হাতির সুরক্ষায় রেল বনদফতরের সমঝোতা
ঝাড়গ্রাম, ২৩ ডিসেম্বর (হি.স.): বাঁশতলা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনার পর দীর্ঘদিন ধরে হাতির সুরক্ষা নিয়ে রেল ও বনদফতরের মধ্যে মতবিরোধ চলছিল। একাধিক আলোচনা ব্যর্থ হলেও অবশেষে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সমঝোতায় পৌঁছাল দুই পক্ষ। ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের
হাতির সুরক্ষায় রেল বনদফতরের সমঝোতা


ঝাড়গ্রাম, ২৩ ডিসেম্বর (হি.স.): বাঁশতলা এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনার পর দীর্ঘদিন ধরে হাতির সুরক্ষা নিয়ে রেল ও বনদফতরের মধ্যে মতবিরোধ চলছিল। একাধিক আলোচনা ব্যর্থ হলেও অবশেষে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সমঝোতায় পৌঁছাল দুই পক্ষ। ঝাড়গ্রাম বনবিভাগের প্রস্তাব মেনে রেললাইনের দু’পাশ থেকে ব্যারিকেট সরানো এবং হাতির স্বচ্ছন্দ যাতায়াতের জন্য একাধিক স্থানে ‘সফট প্যাডিং’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ পূর্ব রেল।

মঙ্গলবার বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ঝাড়গ্রাম বনবিভাগ ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের আধিকারিকদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে বনদফতরের আপত্তি মেনে নিয়ে ঝাড়গ্রাম ও খেমাশুলির মধ্যবর্তী রেলপথে ব্যারিকেট বসানোর কাজ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল। ইতিমধ্যে লাইনের দু’পাশে প্রায় ৪০০ মিটার জুড়ে যে গার্ডরেল বা ব্যারিকেট বসানো হয়েছিল, তা সরিয়ে নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, দেশজুড়ে রেললাইন ‘ক্যাটল প্রুফ’ করার লক্ষ্যে লাইনের দু’পাশে লোহার ব্যারিকেট বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। সেই অনুযায়ী অক্টোবর মাসের শেষ দিকে খড়্গপুরের খেমাশুলি থেকে ঝাড়গ্রামের দিকে এই কাজ শুরু হয়। তবে এই এলাকা হাতির গুরুত্বপূর্ণ করিডর হওয়ায় বনদফতর কাজ বন্ধের জন্য রেলকে চিঠি দেয়।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, কুমারী, দোগেড়িয়া, বাঁশতলা, রাসুয়া, লালগেড়িয়া ও নলবনা—এই ছয়টি পয়েন্টে রেললাইনের উপর ১৫ মিটার চওড়া সফট প্যাডিং করা হবে। সফট প্যাডিং হল মাটি দিয়ে তৈরি নরম পথ, যাতে হাতির পায়ের নিচে পাথরের চাপ না পড়ে এবং তারা দ্রুত ও নিরাপদে রেললাইন পার হতে পারে।

এছাড়াও বাঁশতলা, কুমারী ও দোগেড়িয়া এলাকায় দুটি ওভারপাস নির্মাণের প্রস্তাব দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বনদফতর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, খেমাশুলি–সড়ডিহা–বাঁশতলা–ঝাড়গ্রাম রেলপথটি হাতির একটি ঐতিহ্যবাহী চলাচলের করিডর। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে দলবদ্ধ হাতি এই জঙ্গলঘেরা পথ ব্যবহার করে আসছে। রেলপথ দু’পাশ থেকে সম্পূর্ণ আটকে গেলে হাতিরা গ্রামে ঢুকে পড়ার আশঙ্কা ছিল, যা মানুষ ও হাতি—উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারত।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮ জুলাই বাঁশতলা এলাকায় গভীর রাতে ট্রেনের ধাক্কায় তিনটি হাতির মৃত্যু হয়। এরপর থেকেই রেললাইনে হাতির সুরক্ষার দাবিতে একাধিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল ঝাড়গ্রাম বনদফতর। অবশেষে সেই প্রস্তাবগুলি বাস্তবায়নের পথে।

এই প্রসঙ্গে ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, “সোমবার রেলের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে রেললাইনের দু’পাশ থেকে ব্যারিকেট সরানো হবে, ছয়টি স্থানে সফট প্যাডিং করা হবে এবং দুটি ওভারপাস নির্মাণের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট বনদফতরে পাঠানো হয়েছে।”

---------------

হিন্দুস্থান সমাচার / গোপেশ মাহাতো




 

 rajesh pande