কলকাতা, ১৪ অক্টোবর (হি.স.): “আর.জি.কর ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন রাতে মেয়েদের ডিউটি বন্ধ করে দেওয়া হোক। তাহলে ভাবুন ধর্ষকরা রাতে ঘুরে বেড়াতে পারবে অথচ কর্মরত মেয়েরা ভয়ে দিন কাটাবে।” দুর্গাপুর গণধর্ষণ কান্ডে রাজ্য সরকারের গাফিলতি নিয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের একথা বলেন বিজেপি নেত্রী লকেট চ্যাটার্জি।
তিনি বলেন, বাংলায় আর কিছুদিন পরে মা কালীর পুজো হতে চলেছে তাকে কেউ কালী রূপে পুজো করবেন, কেউ লক্ষ্মী রূপে পুজো করবেন আর সেই বাংলায় মেয়েদের ধর্ষণ হচ্ছে। আজকে দিনের পর দিন মেয়েদের ধর্ষিতা হতে হচ্ছে। আর.জি.কর ঘটনার পরেও এই রাজ্যের হুঁশ ফিরল না।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী এমন কথা বলতে পারেন তা অত্যন্ত লজ্জার। ভারতবর্ষ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে ভূমিকা সিং, সোফিয়া কুরেশীর মত নেতৃত্বরা পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁরা ব্রিফ দিচ্ছেন সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলা যেন পেছনের দিকে হাঁটছে।
এখানে অন্য রাজ্য থেকে ডাক্তারি পড়তে আসা একটি মেয়েকে আজ ধর্ষকদের শিকার হতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন রাত্রিবেলা নাকি মেয়েরা ঘরের মধ্যে থাকবে! লক্ষ্মীর ভান্ডার দিয়ে এই তৃণমূল কংগ্রেস সরকার মহিলাদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তিনি একজন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে একটা ফোন পর্যন্ত করেননি তাহলে বোঝাই যাচ্ছে তাঁর মধ্যে কোনো মানবিকতাই নেই।”
লকেট বলেন, “ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী মেয়েটির চিকিৎসা এবং পড়াশোনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে সেখানে আমাদের বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একটা কথাও বলেননি। আর কোনও বাবা মা ভরসা পাবে এই বাংলায় মেয়েদেরকে পড়তে পাঠাতে? তাঁরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে এই বাংলায় ধর্ষকরা শাস্তি পায় না। মুখ্যমন্ত্রীর পোষা পুলিশরা ভিতরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে, আমাদের ঢুকতে দেওয়া পর্যন্ত হচ্ছে না। পুরো সিস্টেমটাকে গলা টিপে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
লকেট বলেন, আজকে যদি আর.জি.করের বিচার হতো তাহলে এই ধরণের দুর্ঘটনা পুনরায় ঘটতে পারত না। আমরা আমাদের বাংলার মাটিতে বার বার জন্ম নিতে চাই কিন্তু এই বাংলার মাটিকে অপবিত্র করে দিয়েছে আমাদের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে তৃণমূল সরকার লক্ষ্মীশ্রী, কন্যাশ্রী, যুবশ্রীর মতো প্রকল্পগুলিকে সামনে নিয়ে মহিলাদের এগিয়ে দিচ্ছেন সেখানে তৃণমূল সরকারের এই ধরনের মন্তব্য খুবই হতাশার।”
লকেট বলেন, “ধিক্কার জানাই এই সরকারকে। ২০১১ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষমতায় নারীদের অবস্থা গত ৩৪ বছরের থেকেও দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আমরা চাই আমাদের কাদম্বিনী দেবীর বাংলা, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের বাংলা, কল্পনা দত্তের বাংলা, বীণা দাস, মাতঙ্গিনী হাজরাদের বাংলাতে বারে বারে জন্ম নিতে। আমরা চাই আমাদের রাজ্যের মানুষ নিষ্ঠুরতম এই মুখ্যমন্ত্রীকে ২০২৬ সালে বিদায় দিক।”
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / অশোক সেনগুপ্ত