বাঁকুড়া, ১৮ অক্টোবর (হি.স.) : “২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন আপনাকে গণতান্ত্রিকভাবে হারিয়ে উলঙ্গ করে দৌড় করাব”—ছাতনার বিজেপি বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখার্জিকে প্রকাশ্য সভা থেকে এই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের ইন্দপুর ব্লক সভাপতি রেজাউল খাঁ।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রাজ্যজুড়ে চলছে তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনী। কিন্তু সেই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই একাধিক তৃণমূল নেতা বিরোধী শিবিরকে নিশানা করে বিতর্কিত মন্তব্য করায় রাজনৈতিক পরিবেশ ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। শনিবার ছাতনার শুশুনিয়ায় আয়োজিত এক বিজয়া সম্মেলনী সভায় রেজাউল খাঁ বলেন, “ছাতনার ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে রোগীরা বিধায়কের শংসাপত্র পান না। মানুষ তাঁর দেখা পান না। এখন এলাকায় এলে সেলফি তুলতে চাইলেই তাঁর জন্য ডান্ডাতে তেল লাগানো আছে।”
তিনি আরও বলেন, “বিধায়ক আমাকে জেহাদি বলেছেন। কিন্তু আব্দুল কালাম, শাহরুখ খান বা আমির খানকে জেহাদি বলার সাহস ওঁর নেই। যারা সমাজ গড়তে চায়, মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাঁদের জেহাদি বলা মানে নিজের অক্ষমতা প্রমাণ করা।” এরপরই তিনি হুঁশিয়ারি দেন, “আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গণতান্ত্রিকভাবে হারিয়ে ছাতনার বিজেপি বিধায়ককে উলঙ্গ করে দৌড় করাব।”
তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিজেপি। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাঁকুড়ায় তৃণমূলের বিজয়া সম্মেলনী এখন কার্যত হুমকি সম্মেলনীতে পরিণত হয়েছে। বিরোধী নেতা-নেত্রী থেকে নিজেদের দলের কর্মীরাও হুমকির মুখে। দেখা যাক, ২০২৬ সালের নির্বাচনের পর জনগণ কাকে উলঙ্গ করে দৌড় করায়।”
বিজেপি-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলিও তৃণমূলের এই ‘হুমকি রাজনীতি’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, “ইন্দপুরের পাশের তালডাংরা ব্লকের বিজয়া সম্মেলনীতে রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেছিলেন, বিজেপি যেন রাজ্যে একটি খুঁটিও না পায় যেখানে তারা ঝান্ডা বাঁধতে পারে। আগামী ২০২৬-এ রাজ্যে একটাই দল থাকবে তৃণমূল।”
বিরোধীদের দাবি, এমন উসকানিমূলক মন্তব্য রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে কলুষিত করছে। জেলার রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, তৃণমূলের এই ঔদ্ধত্য ও হুমকি সংস্কৃতির ফল ভোটবাক্সেই দেখা যাবে।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সোমনাথ বরাট