নয়াদিল্লি, ২৩ অক্টোবর (হি.স.): রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বৃহস্পতিবার কেরলের ভারকালায় শিবগিরি মঠে শ্রী নারায়ণ গুরুর মহাসমাধি শতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের সূচনা করলেন। এই বিষয়ে জানিয়েছে ভারত সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)।
পিআইবি-র তরফে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, শ্রী নারায়ণ গুরু ছিলেন ভারতের মহান আধ্যাত্মিক নেতা ও সমাজ সংস্কারকদের অন্যতম। তিনি বলেন, তিনি ছিলেন সন্ত এবং দার্শনিক, যিনি আমাদের দেশে সামাজিক এবং আধ্যাত্মিক জগতে প্রভাব ফেলেছিলেন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষকে তিনি অনুপ্রাণিত করেছিলেন সাম্য, একতা এবং মানবপ্রেমের আদর্শে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দীতে ভারত জুড়ে পুনর্জাগরণের অন্যতম শীর্ষ ব্যক্তিত্ব শ্রী নারায়ণ গুরু জীবন উৎসর্গ করেছিলেন মানুষকে অজ্ঞতা এবং কুসংস্কারের অন্ধকার থেকে মুক্ত করতে। তিনি বিশ্বাস করতেন সকল অস্তিত্বের একটি মাত্র রূপের। তিনি আরও বলেন, যে তিনি প্রত্যেক জীবের মধ্যে ভগবানের উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করেছিলেন এবং তিনি দিয়েছিলেন “এক জাতি, এক ধর্ম, মানবতার এক ঈশ্বর”- এর শক্তিশালী বার্তা।
রাষ্ট্রপতি বলেন, তাঁর শিক্ষা ধর্ম এবং জাতপাতের বেড়া ডিঙিয়ে পৌঁছেছে। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, প্রকৃত মুক্তি আসে জ্ঞান এবং সহমর্মিতা থেকে, অন্ধ বিশ্বাস থেকে নয়। শ্রী নারায়ণ গুরু সবসময় জোর দিতেন আত্মশুদ্ধি, সারল্য এবং বিশ্ব প্রেমে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সমস্ত মন্দির, বিদ্যালয় এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠান তিনি স্থাপন করেছিলেন, তা নিপীড়িত শ্রেণির মধ্যে সাক্ষরতা, আত্মনির্ভরতা এবং নৈতিক মূল্যবোধের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেছে। তাঁর লেখা মালয়ালম, সংস্কৃত এবং তামিল কবিতায় গভীর দার্শনিক অন্তর্দৃষ্টির সঙ্গে সারল্যের মিশ্রণ ঘটেছে। মানব জীবন এবং আধ্যাত্মিকতা বিষয়ে তাঁর গভীর জ্ঞান প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর কাজে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান বিশ্বেও শ্রী নারায়ণ গুরুর বার্তা আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, একত্ব, সাম্য এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার যে বার্তা তিনি দিয়েছেন, তা মানব সমাজের নানাবিধ দ্বন্দ্বের চিরকালীন সমাধানের খোঁজ দিয়েছে। শ্রী নারায়ণ গুরুর ঐক্যের বার্তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সকল মানুষ একই ঐশ্বরিক অনুভবের শরিক।
---------------
হিন্দুস্থান সমাচার / সৌম্যজিৎ