সাব্রুমে প্রাকৃতিক কৃষি বিষয়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও সামগ্রী বিতরণ
সাব্রুম (ত্রিপুরা), ২৯ অক্টোবর (হি.স.) : “ন্যাশনাল মিশন ফর ন্যাচারাল ফার্মিং” প্রকল্পের আওতায় বুধবার দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সাব্রুম মহকুমার মনুঘাট অঞ্চলের রামঠাকুর মন্দিরের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হল এক বিশেষ কৃষক প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি। এই কর
কৃষকদের মধ্যে সামগ্রী বিতরণ


সাব্রুম (ত্রিপুরা), ২৯ অক্টোবর (হি.স.) : “ন্যাশনাল মিশন ফর ন্যাচারাল ফার্মিং” প্রকল্পের আওতায় বুধবার দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার সাব্রুম মহকুমার মনুঘাট অঞ্চলের রামঠাকুর মন্দিরের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হল এক বিশেষ কৃষক প্রশিক্ষণ ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি। এই কর্মসূচির আয়োজন করে কৃষি দফতর। অনুষ্ঠানে ১২৫ জন কৃষকের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্লাস্টিক ড্রাম, যাতে তাঁরা নিজেরাই জৈব সার প্রস্তুত করে প্রাকৃতিক কৃষি চর্চায় যুক্ত হতে পারেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহকুমা কৃষি আধিকারিক মনোহর দাস, ছোটখিল সেক্টরের সেক্টর অফিসার শচীন্দ্রনাথ বণিক এবং স্থানীয় গ্রাম প্রধান স্বপন দেবনাথ।

কৃষি আধিকারিক মনোহর দাস বলেন, “প্রাকৃতিক কৃষি হল ভূমি বা মাটির রক্ষাকবচ। এটি মাটির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে এবং মাটিতে বসবাসকারী জীবাণু ও কেঁচোর মতো কৃষকের বন্ধুদের সক্রিয় রাখে। এর ফলে বায়ুমণ্ডলের কার্বন মাটিতে আবদ্ধ হয়ে মাটিকে সচল রাখে।”

তিনি আরও জানান, এই চাষ পদ্ধতিতে রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের পরিবর্তে গরুর গোবর, গোমূত্র, গুড়, বেসন এবং বিভিন্ন ঔষধিগুণ সম্পন্ন গাছের পাতা যেমন নিমপাতা ব্যবহার করে কীটনাশক প্রস্তুত করা হয়। এতে যেমন মাটির পুষ্টি ধরে রাখা যায়, তেমনি কীটপতঙ্গ ও রোগের প্রকোপও স্বাভাবিকভাবে কমে যায়।

রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্র তথা ত্রিপুরা রাজ্য প্রাকৃতিক কৃষি প্রতিষ্ঠান এই উদ্যোগের মাধ্যমে কৃষকদের হাতে কীটনাশক ও রোগনাশকের প্রস্তুত প্রণালী তুলে ধরছে। প্রশিক্ষণে কৃষকদের জানানো হয়—কীরনাশক তৈরি করতে প্রয়োজন ১০ কেজি গরুর গোবর, ৮-১০ লিটার গোমূত্র, ১.৫-২ কেজি গুড়, ১.৫-২ কেজি বেসন এবং প্রায় ১৭০ লিটার জল। এতে ২০০ গ্রাম রাসায়নিকমুক্ত মাটি মিশিয়ে গাঁজন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় একটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক তরল সার, যা মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করে ও ফসলের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে।

এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল কৃষকদের মধ্যে প্রাকৃতিক কৃষি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং তাদেরকে রাসায়নিক সার নির্ভরতা থেকে মুক্ত করে টেকসই কৃষির পথে এগিয়ে নেওয়া। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কৃষকরা জানান, এমন প্রশিক্ষণ ও বাস্তব সহায়তা পেলে তারা প্রাকৃতিক চাষে আরও বেশি করে যুক্ত হতে পারবেন এবং নিজেদের জমির উর্বরতা দীর্ঘদিন ধরে রাখতে সক্ষম হবেন।

হিন্দুস্থান সমাচার / গোবিন্দ দেবনাথ




 

 rajesh pande